মানিকগঞ্জ: মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। আর এ ঈদকে ঘিরে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্নে প্রস্তুত রয়েছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌ-রুট।
পদ্মা সেতু যান-চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার পর থেকেই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে যানবাহনের চাপ কমেছে। ঈদে ঘর মুখো মানুষের চাপ পড়বে বিধায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
এদিকে অপরাধ, যানজট নিরসন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য বিভাগ মাঠ পর্যায়ে এক যোগে কাজ করবে।
জানা যায়, ঈদে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের প্রায় ২১টি জেলার মানুষ ও যানবাহনগুলোকে নির্বিঘ্নে নিরাপদে পারাপার করতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া অংশে ২০টি ফেরি এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌ-রুটে ছয়টি ফেরি প্রস্তুত রয়েছে।
এছাড়া ঈদে লঞ্চ পারাপারের যাত্রীদের জন্য দুটি নৌ-রুটে ৩২টি লঞ্চ প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি এবং বিআইডব্লিউটিএ দাবি করছে এবারের ঈদে কোনো যাত্রীকেই ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হবে না। অন্য দিকে মানিকগঞ্জ অংশের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের প্রায় সব কয়টি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সিসি ক্যামেরা এবং ঘাট পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করবে জেলা পুলিশ। ঈদে ঘর মুখো যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়াসহ অন্যান্য ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে মহাসড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় জিরো পয়েন্টে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ২৪ ঘণ্টাই একটি মেডিকেল টিম ঘর মুখো মানুষের সেবায় কাজ করবে।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঈদের আগে ও পরে মোট সাত দিন সাধারণ পণ্যবোঝাই ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি পচনশীল পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো নদী পথ পার হতে পারবে।
পাটুরিয়া লঞ্চ মালিক সমিতির ব্যবস্থাপক পান্না-লাল নন্দী বাংলানিউজকে বলেন, ঈদে পদ্মা নদী পার করতে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট এই দুটি নৌরুটে মোট ৩৩টি লঞ্চ চলাচল করবে।
বিআইডব্লিউটিসি পাটুরিয়া ঘাট পয়েন্টের ব্যবস্থাপক আব্দুল সালাম বলেন, ঈদে ঘর মুখো মানুষ ও যানবাহন পারাপারের জন্য আমাদের বিআইডব্লিউটিসির পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এ ঘাট দিয়ে ঈদের আগে এবং পরে মিলিয়ে মোট সাত দিন পচনশীল পণ্যবাহী বাদে সব ধরনের ট্রাক পারাপার বন্ধ রাখা হবে।
আরিচা ঘাট পয়েন্টের ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আরিচা-কাজিরহাট নৌ-রুটটি দুই বছর ধরে পুনরায় সচল হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হলে পাটুরিয়া অংশে যানবাহনের চাপ অনেকটাই কমে গেছে। তবে নৌ-রুটে তেমন প্রভাব পড়েনি। আমরা আমাদের জায়গা থেকে যতটুকু প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছি।
পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে ভাসমান কারখানা মধুমতির নির্বাহী প্রকৌশলী রুবেলুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এ দুই নৌ-রুটে চলাচলরত ফেরিগুলোর টুকিটাকি যে সমস্যা গুলো ছিল তা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ঈদ যাত্রায় কোনো ফেরির সমস্যা দেখা দিলে তাত্ক্ষণিক আমাদের ভাসমান মধুমতি কারখানায় মেরামত করে দেওয়ার ব্যবস্থা রেখেছি।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ঈদে ঘর মুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্নে আমাদের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাত্ক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মাদ গোলাম আজাদ খান বাংলানিউজকে বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের পারাপার ও নিরাপত্তায় পাটুরিয়া লঞ্চ ও ফেরি ঘাট এলাকায় জেলা পুলিশের সাতটি টিম এক যোগে কাজ করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২৩
আরআইএস