ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

দীর্ঘমেয়াদী অন্ত্রের রোগ চিকিৎসায় বিদেশ যাওয়া লাগবে না: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২৩
দীর্ঘমেয়াদী অন্ত্রের রোগ চিকিৎসায় বিদেশ যাওয়া লাগবে না: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

ঢাকা: দীর্ঘমেয়াদী অন্ত্রের ব্যাধি ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমের (আইবিএস) চিকিৎসায় বিদেশ যাওয়া লাগবে না বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা শারফুদ্দিন। এ রোগের সব ধরণের চিকিৎসা বিএসএমএমইউ’এ আছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) ‘দীর্ঘমেয়াদী অন্ত্রের ব্যাধি আইবিএস দিবস ২০২৩’ উপলক্ষে গ্যাস্ট্রোঅ্যান্টারোলজি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত র‌্যালি ও সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন অধ্যাপক ডা শারফুদ্দিন। সেখানেই এ কথা বলেন।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, দীর্ঘমেয়াদী অন্ত্রের ব্যাধি ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম’র চিকিৎসায় বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন নাই। এসব রোগের চিকিৎসা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে। বাংলাদেশে কমপক্ষে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ আইবিএস রোগে ভুগছেন। এটা একটা বিরাট সংখ্যা। এই রোগের বিষয়ে মানুষের মাঝে সচেতনতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে। এই রোগের আরও উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে গবেষণা কার্যক্রম বাড়াতে হবে। রোগ নির্ণয়ের উপরেও গুরুত্ব দিতে হবে। এ জন্য স্ক্রিনিং কার্যক্রমও জোরদার করতে হবে।

উপাচার্য আরও বলেন, মানুষের ধারণা রয়েছে অতিরিক্ত পানি খেলে কিডনি ভালো থাকবে, এটা ভুল ধারণা। দিনে দুই থেকে আড়াই লিটারের বেশি পানি পান করা উচিত না। দিনে দুই লিটার পানি পান করাই হলো সর্বোত্তম।

গ্যাস্ট্রোঅ্যান্টারোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আনওয়ারুল কবীরের সভাপতিত্বে ও অধ্যাপক ডা. মো. রাজীবুল আলমের সঞ্চালনায় আয়োজিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএসএমএমইউ উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মাসুদুর রহমান খান ও সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. নুরুজ্জামান।

সেমিনার থেকে বলা হয়, আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম দীর্ঘমেয়াদী অন্ত্রের ব্যাধি। বিশ্ব জনসংখ্যার ১০ শতাংশ লোক আইবিএস রোগে ভুগছেন। আক্রান্ত ব্যক্তি ঘন ঘন পাতলা পায়খানা, পেটে ব্যথা দীর্ঘমেয়াদী আমাশয়, পেট ফেঁপে থাকা, পেটে কামড় দিয়ে পায়খানা হওয়াসহ নানাবিধ উপসর্গ প্রকাশ করে। কারও কারও ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্যও হতে পারে। জীবনহানীকর কোনো সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও রোগীরা দীর্ঘসময় ধরে কষ্ট পেতে থাকে এবং এতে তাদের পারিবারিক, সামাজিক, পেশাগত জীবন ব্যাহত হয়।

পরিপাকতন্ত্রের মাংসপেশি ও বায়ুর অস্বাভাবিক সংকোচন, প্রসারণ, উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পরিবর্তনসহ নানাবিধ কারণ আইবিএস রোগের কারণ হিসেবে ধারণা করা হয়। উদ্বেগ ও মানসিক চাপে যারা থাকেন তারা এই রোগে বেশি ভোগে। পুরুষের তুলনায় নারীরা আইবিএস রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। আইবিএস রোগের উপসর্গ নিয়ন্ত্রণই রোগ নিয়ন্ত্রণের মূলমন্ত্র। যেসব খাবারে পেটের সমস্যা বাড়ে, সেসব এড়িয়ে চলতে হবে। দুধ, দুগ্ধজাত খাবার, শাক, অতিরিক্ত তেলে ভাজা, অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার, চিনি, ক্যাফেইন ইত্যাদি এড়িয়ে চলা ভালো।

মানসিক চাপ কমাতে ব্যায়াম, যোগব্যায়াম, মেডিটেশন করতে পারেন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী উপসর্গ অনুযায়ী উপসর্গ প্রশমনের জন্য ঔষধ সেবন করতে হবে। মনস্তাত্ত্বিক থেরাপি আইবিএস রোগীর জন্য ফলপ্রসূ। জনসচেতনতা ও কুসংস্কার দূরীকরণই হতে পারে আইবিএস মোকাবিলার মূল হাতিয়ার।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২৩
আরকেআর/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।