ঢাকা: সরকারি সফরে তিন দেশে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই সপ্তাহের এ সফরে প্রথমে তিনি জাপান যাবেন।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) সকাল পৌনে ৮টায় প্রধানমন্ত্রী তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাপানের টোকিওর উদ্দেশে রওনা হবেন।
স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় টোকিওর হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরে জাপান সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ও টোকিওতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন।
বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রী সফরকালীন আবাসস্থলে যাবেন।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে টোকিও যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাপান সফরের দ্বিতীয় দিন বুধবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটির সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
বিকেলে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাবেন শেখ হাসিনা। সেখানে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে।
পরে সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
শীর্ষ পর্যায়ের এ বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর কৃষি, মেট্রোরেল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল আপগ্রেডেশন, শিপ রিসাইক্লিং, কাস্টমস ম্যাটারস, ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি, ডিফেন্স কো-অপারেশন, আইসিটি ও সাইবার সিকিউরিটি কো-অপারেশনসহ বিভিন্ন সেক্টরে আটটি চুক্তি বা সহযোগিতা স্মারক সই হতে পারে।
এ ছাড়াও জাপান সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জাইকার প্রেসিডেন্ট, জাপান বাংলাদেশ পার্লামেন্টরি ফ্রেন্ডশিপ লীগের প্রেসিডেন্ট, জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এর গভর্নর, জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের স্ত্রী।
জাপান সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট, জাপানে বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটি আয়োজিত সংবর্ধনাসহ অনেকগুলো কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
জাপান সফরে প্রধানমন্ত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য বিশিষ্ট জাপানি নাগরিকদের সম্মাননা দেবেন। এ ছাড়া তিনি মিরাইকান জাতীয় জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।
শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেলে টোকিও থেকে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই তারিখে স্থানীয় সময় বিকেলে ওয়াশিংটন ডালাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনি সফরকালীন আবাসস্থলে যাবেন।
সোমবার (১ মে) বিশ্বব্যাংক সদরদপ্তরে বাংলাদেশ ও বিশ্ব ব্যাংকের মধ্যে সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে ‘রিফ্লেকশন অন ৫০ ইয়ার্স অব ওয়ার্ল্ড ব্যাংক – বাংলাদেশ পার্টনারশিপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
একই দিন প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ভাইস-প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। এ ছাড়া বিশ্ব ব্যাংকের বোর্ড মেম্বারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধিদল।
ওয়াশিংটন সফরকালে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদানসহ বেশ কিছু কর্মসূচিতে যোগ দেবেন।
বৃহস্পতিবার (৪ মে) ওয়াশিংটন থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডন যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের আমন্ত্রণে লন্ডন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার (৫ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাকিংহাম প্যালেসে নতুন রাজা ও রানির রাজ্যাভিষেকের আগাম সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এ ছাড়া এদিন শেখ হাসিনা কমনওয়েলথ নেতাদের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন।
শনিবার (৬ মে) ওয়েস্টমিনিস্টারে রাজা ও রানির রাজ্যাভিষেকের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
লন্ডন সফরে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কর্মসূচি এবং যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
তিন দেশ সফর শেষে মঙ্গলবার (৯ মে) সকালে দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৩
এমইউএম/আরএইচ