ঢাকা: সুদানে অবিলম্বে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। সুদানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) এক জরুরি সভায় বিবদমান সুদানের সশস্ত্র বাহিনী এবং সুদান র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) প্রতি এ আহ্বান জানায় বাংলাদেশ।
বুধবার (৩ মে) সৌদি আরবের সভাপতিত্বে সুদানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য ওআইসির নির্বাহী কমিটির এক জরুরি সভা সংস্থাটির জেদ্দাস্থ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত হয়। ওআইসির স্থায়ী প্রতিনিধি এবং সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী ওআইসির সভায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। সভার শুরুতেই ওআইসি মহাসচিব হিসেন ব্রাহিম তাহা সুদান পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, সুদানের এ লড়াই শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য সুদানের জনগণের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষাকে ক্ষুণ্ণ করছে। সেখানে যুদ্ধের ফলে ব্যাপক মানুষের জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি এবং ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, যুদ্ধের ফলে ইতোমধ্যে সুদানে অনেক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে, খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে সেখানে ব্যাপক লুটপাট হচ্ছে—স্থানীয় জনগণ ও বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের প্রবাসী বাসিন্দারা যার শিকার হচ্ছেন।
তিনি বলেন, সুদানে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশি নাগরিক বসবাস করছেন, যারা প্রত্যাবাসনের জন্য অপেক্ষা করছেন। বাংলাদেশ সরকার তাদের সুদান থেকে নিরাপদে প্রত্যাবাসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সুদান থেকে বাংলাদেশিসহ বিদেশি নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য সৌদি আরবের আন্তরিক প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত।
ওআইসির জরুরি সভায় রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, যুদ্ধের সময় সুদানে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং মিশন প্রধানের বাসভবনে হামলা হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং কূটনৈতিক নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি সুদান সরকার এবং যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী কূটনৈতিক মিশন এবং এর কর্মীদের নিরাপত্তা এবং সার্বিক সহযোগিতা নিশ্চিত করার বিষয়ে অনুরোধ জানান।
ওআইসির সভায় সুদান, তুরস্ক, আরব আমিরাত, কুয়েত, বাহরাইন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আলজেরিয়া, ইরাক, মিশর,পাকিস্তান, গাম্বিয়া, মৌরিতানিয়া, ক্যামেরুন, জিবুতি, চাদ, তিউনিসিয়া, ফিলিস্তিন, লিবিয়া, মরক্কো, লেবানন, জর্দানসহ অন্যান্য দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। সভায় সুদানে যুদ্ধ বন্ধ, শান্তি প্রক্রিয়া শুরু ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানিয়ে একটি যৌথ ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০১ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০২৩
টিআর/এমজেএফ