ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পটুয়াখালী জেলা মডেল মসজিদ

উদ্বোধনের ১৮ দিন পরও মসজিদে নামাজ পড়তে পারেননি মুসুল্লিরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা, মে ৪, ২০২৩
উদ্বোধনের ১৮ দিন পরও মসজিদে নামাজ পড়তে পারেননি মুসুল্লিরা

পটুয়াখালী: উদ্বোধনের পর ১৮ দিন পেরিয়ে গেলেও পটুয়াখালীতে জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামি সংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্রে নামাজ আদায়সহ অন্যান্য ইবাদত বন্দেগি করার সুযোগ পাচ্ছেন না ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিরা। মসজিদটি এখনও ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি।

এতে করে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকার কারণেই গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে নির্মিত ওই মসজিদে এখনবধি নামাজ আদায় করা যাচ্ছে না বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি সারা দেশের চতুর্থ ধাপে ৫০টি মডেল মসজিদের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার মধ্যে পটুয়াখালী জেলা মডেল মসজিদ একটি।

জানা যায়, ওই সময় তড়িঘড়ি করে অস্থায়ী বিদ্যুৎ দিয়ে জাঁকজমকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করা হয়। অথচ স্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদনই করেনি গণপূর্ত বিভাগ।

এ ঘটনায় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এমন একটি উন্নয়ন প্রকল্পে বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়া নিয়ে গণপূর্ত বিভাগ ও ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। দুই বিভাগের টালবাহানায় এভাবেই কেটে গেছে দীর্ঘ ১৮টি দিন।

পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট আল আমিন বলেন, এমন চমৎকার একটি স্থাপনা উদ্বোধনের পরও সেটি ব্যবহার না করাটা দুঃখজনক। দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তরের গাফেলতিতে এমনটি হয়েছে। আমরা আশা করি দ্রুত মসজিদটি খুলে দিয়ে নামাজের ব্যবস্থা করা হবে।

স্থানীয়রা বলেন, এত বড় একটা গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প, যা জেলা পর্যায়ে কমকর্তাদের সামনেই হয়েছে। এটায় কীভাবে এমন গাফলতি হয়! কোনো মনিটরিং না করে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে চলে গেছেন সবাই। তারপর আর খবর নেয়নি তারা। কোটি কোটি টাকার প্রকল্প এবং একটি ধর্মীয় স্থাপনা, উদ্বোধন হলো কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগের কারণে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এই ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশে সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের এমন উদাসীনতা হতে পারে?

এ বিষয়ে পটুয়াখালী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য অনেক আগেই আবেদন করা হয়েছে। তবে এখনও সংযোগ দেওয়া যায়নি। আর বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় মুসুল্লিরা নামাজ পড়তে পারছেন না। বিদ্যুৎ সংযোগ পেলেই নামাজ শুরু হবে।  

তবে এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো গাফেলতি নেই বলে দাবি করেছেন ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি পটুয়াখালী বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম।  

তিনি বলেন, গণপূর্ত বিভাগ যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তারা আবেদন করেনি। প্রথমে গত ৯ মার্চ তারা আমাদের কাছে একটি আবেদনপত্র পাঠায়। এরপর ১৫ এপ্রিল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলেও তাতে কারও স্বাক্ষর ছিল না। সবশেষ ২ মে তারা স্বাক্ষরসহ কাগজপত্র জমা দিয়েছে। আমরা প্রথম প্রাক্কল্লিত ব্যয় তৈরি করে তাদের কাছে পাঠিয়েছি। প্রাকল্লন অনুযায়ী তারা টাকা জমা দিলে ১৮ দিনের মধ্যে সংযোগ দেওয়া হবে। তবে আমরা এর আগেই সংযোগ দেব।  

পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, কী কারণে এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি।  সে বিষয়ে আমি খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

পটুয়াখালী ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেন, গত ১৫ এপ্রিল মডেল মসজিদের জন্য ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং খাদেম নিয়োগের প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করা হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ পেলেই আমরা নামাজ শুরু করব।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।