ঢাকা, বুধবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

এমপির সামনেই আ.লীগ সভাপতি লাঞ্ছিত, পুলিশসহ আহত ১০

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১০ ঘণ্টা, মে ৮, ২০২৩
এমপির সামনেই আ.লীগ সভাপতি লাঞ্ছিত, পুলিশসহ আহত ১০

নোয়াখালী: নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিমের সামনেই তার অনুসারীদের হাতে উপজেলার দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।

লাঞ্ছনার শিকার দুই নেতা হলেন - উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জহির উদ্দিন স্বপন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন।

এ ঘটনার সময় হট্টগোল শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এসময় ৩ পুলিশ সদস্য অন্তত ১০ আহত হয়।  

রোববার (৭ মে) সন্ধ্যার দিকে চাটখিল উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের জনতা বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন অনুষ্ঠানে এসব ঘটনা ঘটে।  

মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জহির উদ্দিন স্বপন অভিযোগ করে বলেন, বিকেলে স্থানীয় এমপি এইচ এম ইব্রাহিম মোহাম্মদপুর জনতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আসেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমরা এমপি সাহেবের পাশে দাঁড়ানো ছিলাম। ওই সময় এমপির সামনেই তার অনুসারী মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মেহেদী হাসান বাহলুল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেনকে ধাক্কা দেয়। বিষয়টি আমি দেখতে পেয়ে বাহলুল চেয়ারম্যানের হাত ধরে ফেলি। তাকে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতাকে ধাক্কা দেওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করি। কিন্তু সেই জবাব না দিয়ে বাহলুল চেয়ারম্যান তার হাত ধরায় এমপির সামনেই আমাকে লাঞ্ছিত করে।

তিনি আরও বলেন, একপর্যায়ে এমপি চলে গেলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমাদের তার কক্ষে বসায়। সেখানে বাহলুল চেয়ারম্যানের অনুসারীরা তার নেতৃত্বে স্কুলে হামলা চালায় এবং আমাদের অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে। খবর পেয়ে চাটখিল থানার ওসি স্কুল থেকে আমাদের উদ্ধার করে। ওই সময় বাহলুল চেয়ারম্যানের সমর্থকরা পুলিশের গাড়িতে ইট নিক্ষেপ করে।  

জহির উদ্দিন স্বপন, পরবর্তীতে থানার ওসি সেখানে গিয়ে বাহলুল চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে। একপর্যায়ে সেখানে ওসিকে ধাক্কা দেয় বাহলুল চেয়ারম্যান। এরপর পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় আমাদের ৭ জন নেতাকর্মী আহত হয়।

চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ প্রাথমিক বিদ্যালয় উদ্বোধন অনষ্ঠানে উপস্থিত ছিলো। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমি এমপির পাশে দাঁড়ানো ছিলাম। ওখানে বাহলুল চেয়ারম্যান প্রথমে আমাকে ধাক্কা দেয়। এ নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বপন প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যানের সাথে বাগবিতণ্ডা ঘটে। ওই ঘটনার জের ধরে বাহলুল চেয়ারম্যান এমপির সমেনেই তার অনুসারীদের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিকে ধরতে আদেশ দেয়। পরে আমি এমপি সাহেবকে বলি বাহলুলের লোকজন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির ওপর হামলা করছে।  

অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মেহেদী হাসান বাহলুলের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাই এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।  

নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, আমার সামনে কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি চলে আসার পর কি ঘটেছে, ওই বিষয়ে কিছু জানি না।  

অপর এক প্রশ্নের জবাবে এমপি বলেন, স্কুল কমিটি নিয়ে তাদের মধ্যে পূর্ব বিরোধ ছিল।  

চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়। তবে এমপি সাহেবের সামনে কোন ঘটনা ঘটেনি।  

অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, বাহলুল চেয়াম্যানের সঙ্গে তার কোনে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৫ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২৩
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।