ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রোহিঙ্গাদের ৬.৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিচ্ছে নরওয়ে

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৩ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২৩
রোহিঙ্গাদের ৬.৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিচ্ছে নরওয়ে

ঢাকা: নরওয়ের জলবায়ু ও পরিবেশ মন্ত্রীর স্টেট সেক্রেটারি রানহিল্ড শুনার সিরস্টা বুধবার (১০ মে) বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক কার্যক্রমের জ্বালানি ও পরিবেশ কর্মসূচিতে তার দেশের ৭০ মিলিয়ন ক্রোনা সহায়তা ঘোষণা করেছেন। যা ৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমতুল্য।

এ অবদান রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য রান্নার পরিচ্ছন্ন জ্বালানি সরবরাহ, জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্রের অব্যাহত পুনর্বাসন এবং শরণার্থী ও স্থানীয় বাংলাদেশিদের দক্ষতা উন্নয়নে সাহায্য করবে। নিরাপদ জ্বালানি ও শক্তির জন্য এসব কর্মকাণ্ড জাতিসংঘের খাদ্য এবং কৃষি সংস্থা (এফএও), জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা (আইওএম), জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) ও বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (ডব্লিউএফপি) যৌথ কার্যক্রম সেফ এক্সেস টু ফুয়েল অ্যান্ড এনার্জি প্লাস, ফেইজ ২- এর আওতাধীন।

রানহিল্ড শুনার সিরস্টা বলেন, ২০১৯ সালে চালু হওয়ার পর থেকেই নরওয়ে সেফ+ প্রোগ্রামে আর্থিক সাহায্য দিয়ে আসছে। এ কর্মসূচিটি শরণার্থীদের জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশের ওপর যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে তা চমৎকার।

তিনি আরও বলেন, বৃক্ষ রোপণ ও পুনঃবনায়নের মাধ্যমে যেভাবে এ কর্মসূচির হাত ধরে সবুজ ফিরে আসছে, সেটা আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়। আমি আনন্দিত যে আমাদের অনুদানে শরণার্থীদের জন্য রান্নার পরিচ্ছন্ন জ্বালানির ব্যবস্থা করা যাবে এবং স্থানীয় পরিবেশ পুনরুদ্ধারের কাজ চলবে; যার উপকার পাবে শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় দানকারী স্থানীয় জনগণ। রান্নার জন্য নিরাপদ জ্বালানি না থাকলে বনাঞ্চল আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং লাকড়ি সংগ্রহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিপদগুলো ফিরে আসবে। এটা রোধ করা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এ প্রোগ্রামের সঙ্গে জড়িত জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর পক্ষে ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রতিনিধি (রিপ্রেজেন্টেটিভ) ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও বলেন, নরওয়ে সরকার ও এর জনগণের এই অনুদানের মাধ্যমে আমরা ১ লাখ ৯০ হাজার শরণার্থী পরিবারকে এলপিজি দিতে পারবো। এ পরিচ্ছন্ন জ্বালানি শরণার্থীদের সুস্থতা ও জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে এবং এটি বনে লাকড়ি সংগ্রহ করতে গিয়ে লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা ও অন্যান্য সুরক্ষা ঝুঁকি রোধ করে।

তিনি বলেন, কক্সবাজারের পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের সফল পুনঃবাসন এবং উল্লেখযোগ্য হারে কার্বন ডাই অক্সাইডের নিঃসরণ কমানোর মাধ্যমে জলবায়ু সংকটের সম্মুখীন কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণের জন্যও এটি সাহায্য করবে।

এলপিজি ও জ্বালানি-বান্ধব রান্নার সরঞ্জাম বিতরণের মাধ্যমে লাকড়ির ব্যবহার ও এর সঙ্গে গাছ কাটার পরিমাণ কমানো যায়। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত চার লাখ টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ রোধ করা সম্ভব হয়েছে। নতুন বৃক্ষরোপণ, পুনঃবনায়ন ও ঢাল মজবুতকরণের মতো কাজের মাধ্যমে পরিবেশ পুনরুদ্ধার ও কৃষি বিষয়ক দক্ষতা উন্নয়ন এবং ঝিরি ও পানি নিষ্কাশনের বিভিন্ন প্রাকৃতিক ব্যবস্থার উন্নতির মাধ্যমে এ যৌথ কর্মসূচি ঝুঁকিতে থাকা শরণার্থী ও স্থানীয় জনগণকে সাহায্য করবে এবং তাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা দিবে।

২০২২ সালের জুলাই মাসে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে চালু হওয়া সেফ+২ কার্যক্রমে সহায়তা দিয়ে আসছিল কানাডা ও সুইডেন সরকার, যাদের সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে নরওয়ে। ২০১৯ সালে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম-এর নেতৃত্বে শুরু হওয়া এ কর্মসূচির প্রথম ধাপ সেফ+ এর সফলতা ও অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে এগিয়ে চলছে বর্তমান কার্যক্রম।

প্রায় ছয় বছর আগে মিয়ানমারে সহিংসতা ও নিপীড়নের কারণে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী হতে বাধ্য হয়েছিল। এ মানবিক সংকটটিকে এখন একটি প্রলম্বিত শরণার্থী পরিস্থিতি হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যার তহবিল মারাত্মকভাবে কমে আসছে। প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২৩
টিআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।