ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দুর্যোগপ্রবণ বরগুনায় নেই কোনো আবহাওয়া অফিস

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৪ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৩
দুর্যোগপ্রবণ বরগুনায় নেই কোনো আবহাওয়া অফিস

বরগুনা: দেশের সর্ব দক্ষিণের জেলা বরগুনা। সাগর তীরবর্তী হওয়ায় প্রতি বছরই আঘাত হানে কোনো না কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

 দুর্যোগপ্রবণ হওয়া সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট কোনো অফিস পায়নি উপকূলীয় এ জেলাটি।  

এর ফলে সঠিক সময়ে সঠিক পূর্বাভাস না পেয়ে বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত হচ্ছে দক্ষিণের এই জনপদ। ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে এখানকার সাধারণ মানুষ, জেলে ও কৃষকরা।

অভিযোগ রয়েছে, বিগত দিনে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় সিডর, মহাসেন, আইলা, রোয়ানু ও মোরার সময় আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্যের সঙ্গে ঝড়ের গতি ও স্থান পরিবর্তনের অমিল ছিল এখানে।

বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, বিগত প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের সময় আবহাওয়া অফিসের তথ্যের সঙ্গে অনেক গরমিল থাকায় গোটা উপকূলীয় এলাকার জনসাধারণের ওপর বন্যার গতি ও স্থান পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে।

তালতলীর পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীর বেড়িবাঁধ এলাকার শাহ ফিরোজ বলেন, আবহাওয়া অফিস না থাকায় ঘূর্ণিঝড়ের খবর পেলেই জলোচ্ছ্বাসের ভয়ে ঝুকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের কাছে গিয়ে আমাদের রাত-দিন বসে থাকতে হয়। একটি স্থানীয় আবহাওয়া অফিস আমাদের খুব দরকার।  

বরগুনা জেলা নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন কামাল বলেন, বরগুনায় শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ আবহাওয়া অফিস নির্মাণ করা হোক। আবহাওয়া অফিস নির্মাণ করা হলে এখানকার মানুষজন আবহাওয়ার সঠিক পূর্ভাবাস পেয়ে, সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা নিতে পারবে।

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, এখানে বসে সঠিক সময়ে আবহাওয়ার সংকেত না পাওয়ায় গভীর সাগরে থাকা জেলেদের আমরা তথ্য দিতে পারি না। যার ফলে প্রতি বছরই ঝড়ের কবলে পড়ে বহু জেলে ট্রলার ডুবিতে মারা যাচ্ছেন।

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) বরগুনা সদর উপজেলার টিম লিডার জাকির হোসেন মিরাজ বলেন, এ জেলায় আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট কোনো অফিস না থাকার কারণে প্রায়ই আমাদের জনগণের তোপের মুখে পড়তে হয়। ঢাকা থেকে আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহ করতে যে সময় লেগে যায়, এখানে ততক্ষণে আবহাওয়া অনেক পরিবর্তন হয়ে যায়।

বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, বরগুনা দুর্যোগপ্রবণ একটি এলাকা এবং প্রতি বছরই এ অঞ্চলে বন্যা বা ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানায় জানমালের অনেক ক্ষতি হয়। এসব বিষয় বিবেচনা করে আমরা ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। যদিও প্রয়োজন সত্ত্বেও আবহাওয়া অফিস না থাকায় এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের আক্ষেপ রয়েছে। তবে আমি আশাবাদী, খুব শিগগিরই এখানে একটি স্থানীয় আবহাওয়া অফিস স্থাপন করা হবে এবং বিষয়টি দ্রুত সরকারের নজরে আসবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৯ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।