ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় মোখা: উৎকণ্ঠায় উপকূলের বাসিন্দারা, শঙ্কা গবাদি পশু নিয়ে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১০ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৩
ঘূর্ণিঝড় মোখা: উৎকণ্ঠায় উপকূলের বাসিন্দারা, শঙ্কা গবাদি পশু নিয়ে

লক্ষ্মীপুর: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন লক্ষ্মীপুরের মেঘনার উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা। সেই সঙ্গে নিজেদের গবাদিপশু রক্ষা নিয়ে চিন্তিত তারা।

যদিও শনিবার (১৩ মে) এ পর্যন্ত মেঘনার তীরবর্তী এলাকার আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মেঘনায় স্বাভাবিক নিয়মেই জোয়ার-ভাটা হচ্ছে। মৎস্যজীবীরা শুক্রবার (১২ মে) রাত থেকেই মাছ ধরার ট্রলার বা নৌকা নিয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করছেন।

এখন পর্যন্ত উপকূলীয় বাসিন্দাদের কাউকে আশ্রয়ণ কেন্দ্রে যেতে কিংবা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়ে যেতে দৃশ্যত চোখে পড়েনি।

তবে মেঘনার বুকে জেগে উঠা চরে থাকা গৃহপালিত পশুগুলো নদীর তীরবর্তী স্থানে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসতে অনেককেই ট্রলারে করে দুর্গম চরের দিকে রওনা হতে দেখা গেছে।

মেঘনার তীরবর্তী মতিরহাট এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, বির বিরির চরে তাদের মহিষ, গরু, ছাগল ও ভেড়া রয়েছে। সম্ভাব্য দুর্যোগে এসব পশুকে রক্ষা নিয়ে তারা চিন্তিত।

নির্দিষ্ট কোনো উঁচু টিলা বা আশ্রয়স্থল না থাকায় সেগুলোকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় রাখবেন বলে জানান তারা। তবে গবাদি পশু ছেড়ে আশ্রয়ণ কেন্দ্রে যেতে অনাগ্রহ তাদের।

তারা বলেন, চরের গবাদি পশুগুলো আমরা তীরে নিয়ে আসব। নিজেরাও বাড়িতে থাকব। চরে আমাদের প্রায় দুইশ মহিষ আছে। নদীতে ভাটা পড়লে মহিষগুলো তীরে নিয়ে আসব। উঁচু টিলা না থাকায় বাঁধের ওপর মাহিষগুলো রেখে দেব।

মতিরহাট এলাকার বাসিন্দা মো. ইস্রাফিল বাংলানিউজকে বলেন, মেঘনা নদীর বির বিরির চরে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রায় তিন শতাধিক মহিষ, ৫ শতাধিক গরু, দুই-আড়াইশ ছাগল ও ভেড়া রয়েছে। চরে অন্তত দুইশ লোকের বসবাস। তারা সেখানে গবাদি পশু পালনের পাশাপাশি কৃষি কাজ করে থাকে। ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত দেখা দিলে চরের বাসিন্দারা গবাদি পশু নিয়ে উপকূলে চলে আসে। কারো আবার যাবার ব্যবস্থা না থাকলে গবাদিপশু নিয়েই চরেই থেকে যায়। তবে জলোচ্ছ্বাস হলে অনেকের গবাদিপশু ভেসে যাবার শঙ্কা থাকে।
 
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি হাতে নিয়েছে জেলা প্রশাসন। উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করে সর্তক করা হয়েছে বাসিন্দাদের।

জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ জানান, উপকূলীয় মানুষের জানমাল রক্ষায় ১৮৫টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্গতদের জন্য ৪২০ মেট্রিক টন চাল মজুদ রাখা হয়েছে। দুর্যোগ মেকাবিলায় হাতে রাখা হয়েছে নগদ ৮ লাখ ১২ হাজার টাকা। গঠন করা হয়েছে ৬৪ টি মেডিকেল টিম। এছাড়া জনসচেতনতা ও দুর্যোগে উপকূলীয় বাসিন্দাদের উদ্ধারের জন্য সরকারি সংস্থার পাশাপাশি মাঠে থাকবে রেডক্রিসেন্ট, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৩
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।