বরিশাল: ঘূর্ণিঝড় মোখায় সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় বরিশালে সাড়ে ১৬ লাখ মানুষের আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিভাগীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় এ কথা জানানো হয়।
শনিবার (১৩ মে) বিকেলে বরিশাল সার্কিট হাউসের মধুমতি মাল্টিপারপাস হলে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসানের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় জানানো হয়, বরিশাল বিভাগের মধ্যে বরিশাল জেলায় ৫৪১টি, পটুয়াখালীতে ৭০৩, ভোলায় ৭৪৬, বরগুনায় ৬৪২, পিরোজপুরে ৪০৭ ও ঝালকাঠিতে ৬২টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রস্তুত রয়েছে পটুয়াখালীর ২৬টি, ভোলার ৬টি ও বরগুনার ৩টিসহ বিভাগের ৩৫টি মুজিব কেল্লাও। এসব কেন্দ্রে ১৬ লাখ ৪৯ হাজার ৬০৬ জন মানুষ ও ১২ লাখ ৪১ হাজার ৪৯০ গবাদিপশুর আশ্রয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।
এছাড়া বিভাগজুড়ে ৩৯ হাজার ৪২৫ জন সেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি ৪৮টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ এবং ৩৫৭টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। এরমধ্যে ভোলায় ২১টি গবাদিপশুর জন্য মেডিক্যাল টিমও রয়েছে।
বিভাগীয় কমিশনার জানান, বিভাগের ৬ জেলায় ২ হাজার ৭০৮ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য মজুদ করা রয়েছে। এছাড়া ৫৯ লাখ ২০ হাজার ৮০৪ টাকা নগদ অর্থ, ২০ হাজার ৭০০ কম্বল ও ৫৪৩ বান্ডেল টিন হাতে রয়েছে।
সভায় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ভোলা জেলার বেশ কিছু চরাঞ্চলের মানুষকে এরইমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে, সেই সঙ্গে পটুয়াখালীর চরাঞ্চলের মানুষেরা নিজ উদ্যোগে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে গিয়ে ওঠেছে। গভীর সমুদ্র থেকে মাছ ধরা ট্রলারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দুর্যোগে সকলের সমন্বয়ে সাধারণ মানুষের জানমালের হেফাজত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। চিকিৎসা ও বিদ্যুৎ সেক্টরসহ উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।
এ সময় তিনি পটুয়াখালীর বিচ্ছিন্ন এলাকা রাঙ্গাবালী উপজেলার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে যেসব চরাঞ্চলে সাইক্লোন সেন্টার নেই, সেখান থেকে সাধারণ মানুষ ও প্রাণীদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আশার নির্দেশ দেন উপজেলা প্রশাসনকে। এ উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স না থাকায় উপজেলা পরিষদ ভবনে মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেন।
এছাড়া সভায় সেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি যে কোনো পরিস্থিতিতে উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য ফায়ারা সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, নৌ-পুলিশ, কোষ্টগার্ড প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানানো হয়।
বিভিন্ন ইউনিটের পাশাপাশি আমাদের শেখ হাসিনা সেনানিবাসের সেনাসদস্যরাও প্রস্তুত রয়েছেন। এরইমধ্যে তারা বেশ কয়েকটি টিমও গঠন করেছেন বলে জানান বিভাগীয় কমিশনার।
জরুরি সভায় বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম, শেখ হাসিনা সেনা নিবাসের লেফট্যান্টে কর্নেল হাবিবুর রহমান, জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যান বিশেষজ্ঞ কবির খান, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হুমায়ন শাহিন খান, র্যাব-৮ এর উপ অধিনায়ক মেজর জাহাঙ্গীর আলম, মৎস্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপ-পরিচালক আনিসুর রহমান তালুকদার, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম, কোস্ট গার্ডের চিফ পেটি অফিসার বাবুল আক্তার ও নৌ-পুলিশ সুপার কফিল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪১ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৩
এমএস/ এসএম