ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভাঙ্গায় সংঘর্ষে আহত বৃদ্ধের মৃত্যু, শতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর-লুটপাট

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৮ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২৩
ভাঙ্গায় সংঘর্ষে আহত বৃদ্ধের মৃত্যু, শতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর-লুটপাট আলমগীর মাতুব্বর

ফরিদপুর: জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংঘর্ষে আহত আলমগীর মাতুব্বর (৬০) মারা গেছেন।  

রোববার (১৪ মে) সকালে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

 

নিহত আলমগীর ওই উপজেলার আলগী ইউনিয়নের ছোট খারদিয়া গ্রামের লালমিয়া মাতুব্বরের ছেলে।

আলমগীরের মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তার দলের জলিল মাতুব্বর ও আইয়ুব মাতুব্বরের লোকজন প্রতিপক্ষ দলের কাওছার ও বাবলু মাতুব্বরের শতাধিক লোকজনের বাড়িঘর ভাঙচুর করে ও লুটপাট করে নিয়ে যায়। এ সময় নারীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগও পাওয়া গেছে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত করেছে।  

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দুই মাস আগে ভাঙ্গার ছোট খারদিয়া মৌজায় জলিল মাতুব্বরের বাড়ি সংলগ্ন সরকারি প্রায় এক বিঘা জমি দখলমুক্ত করার দাবি জানিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাহমুদুল হাসানের কাছে আবেদন করেন স্থানীয় কয়েকজন। আবেদন পেয়ে মাহমুদুল হাসান সেই জমি দখলমুক্ত করে লাল পতাকা টানিয়ে দেন। পাশাপাশি সরকারি জমির সীমানাও নির্ধারণ করে দেন। এ ঘটনার  জের ধরে ইতোপূর্বে কয়েক বার এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে এবং দুই পক্ষের মধ্যে মামলা মোকদ্দমা চলছিল। এনিয়ে শনিবার (১৩ মে) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার আলগী ইউনিয়নের ছোট খারদিয়া গ্রামে জলিল মাতুব্বর ও আইয়ুব মাতুব্বরের পক্ষের লোকজনের সঙ্গে প্রতিপক্ষ বাবলু মাতুব্বর ও কাওসার মাতুব্বরের লোকজনের সংঘর্ষ হয়। উভয়পক্ষের লোকজন সড়কের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। সংবাদ পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে উভয়পক্ষের ৭-৮ জন লোক আহত হন। আহতদের মধ্যে রোববার সকালে আলমগীর মারা যান।  

পরে মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে জলিল মাতুব্বর ও আইয়ুব মাতুব্বরের লোকজন প্রতিপক্ষ কাওছার ও বাবলু মাতুব্বর দলের শতাধিক লোকজন বাড়ি ঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে। তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করতে গিয়ে কয়েকজন নারী শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন। দুই শতাধিক লোকজন হামলা করে ছয়টি গরু, পাঁচটি ছাগল, ধান, চাল, পেঁয়াজসহ আসবাবপত্র নিয়ে যায়।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ওই দুইপক্ষের লোকজনের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ বাধে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মামলা-মোকদ্দমাও চলছে।  

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রাণেশ পণ্ডিত জানান, গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সংঘর্ষে আহত কয়েকজন লোক চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে আলমগীর মাতুব্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সকালে মারা গেছেন।  

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আহত একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।