গাইবান্ধা: গভীর রাতে অচেনা নম্বর থেকে কল। রিসিভ করা মাত্রই সালাম দিয়ে আল্লাহর অলি পরিচয় দিয়ে একটি কণ্ঠ বলতে থাকেন, ‘বাবা তোর ভাগ্যে বহু ধন-রত্ন দেখা যাচ্ছে।
এভাবে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে স্বর্ণালঙ্কারসহ টাকা লুটে নেওয়া প্রতারকচক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তারা হলেন - জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের দুলু মিয়ার ছেলে মোর্শেদুল ইসলাম (৩২) ও মালাধার কালি পাড়া গ্রামের রেজবর আলীর ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৫০)।
এ ঘটনায় প্রতারিত হয়ে থানায় মামলা করেছেন মো. আব্দুল আলিম (৪৫) নামের এক ব্যক্তি। তিনি বগুড়া জেলার শাহজাহানপুর উপজেলার কাছা হার পাড়া রুপিহার গ্রামের বাসিন্দা।
শুক্রবার (২৬ মে) দুপুরে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ইবনে মিজান।
তিনি বলেন, প্রতারণার শিকার আব্দুল আলিম গুপ্ত ধন তথা সাত রাজার ধন পাওয়ার আশায় ‘আল্লাহর অলির’ দেওয়া বিকাশ নম্বরে পর্যায়ক্রমে ৪ বারে মোট ত্রিশ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন।
এরপর মোবাইল ফোনে অলি-দরবেশ পরিচয় দেয়া ব্যক্তি বলেন, গুপ্ত ধন-সম্পদ পেতে হলে আল্লাহকে খুশি করতে হবে। এজন্য ঘরে থাকা সোনার গহনাগুলো নির্দিষ্ট জায়গায় পুঁতে রেখে আসতে হবে তোকে। এরপর একটা মাটির পাতিলে ৭টি চাল রেখে ঢাকনাসহ সাদা কাপড়ে বেঁধে নিজ ঘরের গোপন জায়গায় রাখতে হবে। একদিন সেই পাতিল খুললেই মিলবে সাত রাজার ধন।
অলি-দরবেশ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তির কথার ফাঁদে পড়ে গত ৭ মে রাত ৮টার দিকে গোবিন্দগঞ্জের ফুলবাড়ী ইউনিয়নে ফুটানী বাজারের পুলের কাছে বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচে স্ত্রীর ও ভাবির স্বর্ণালঙ্কার রেখে বাড়ি ফেরেন আব্দুল আলিম।
এসব স্বর্ণালঙ্কারের মধ্যে ছিল - ৪ আনা ওজনের একজোড়া কানের দুল, ৪ আনা ওজনের একজোড়া বালা, ৮ আনা ওজনের দুটি স্বর্ণের চেইন, ২ আনা ওজনের টিকলি ১টি, ২ আনা ওজনের ১টি আংটি, ৪ ভরি ওজনের রুপার পায়ের নুপুর ১ জোড়া, ৩ আনা ওজনের মেয়ের কানের রিং ১ জোড়া।
পরদিন ৮ মে সকালে নিজের ঘরে রাখা মাটির পাতিল খুলে দেখেন যে ওই ৭টি চাল ছাড়া এতে আর কিছুই নাই।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়ের হলে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দিনগত রাতে পুলিশ প্রতারকদের গ্রেপ্তার করে৷ ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রতারকচক্রের সহযোগীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার উদয় কুমার সাহা, থানা অফিসার ইনচার্জ ইজার উদ্দিন, পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত বুলবুল ইসলাম, এসআই সুজন কবির এসআই রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২৩
এসএএইচ