ঢাকা, বুধবার, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভুঁইফোড় সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ গুলশান-বনানীর ব্যবসায়ীরা

স্টাফ করসেপন্ডন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৩ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২৩
ভুঁইফোড় সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ গুলশান-বনানীর ব্যবসায়ীরা প্রতীকী ছবি

ঢাকা: রাজধানীর কূটনীতিক পাড়া নামে পরিচিত গুলশান, বনানী। এই এলাকাগুলোতে রয়েছে অভিজাত মানের হোটেলসহ হেয়ার কাটিং সেলুন, বিউটি পার্লার এবং স্পা সেন্টারের মতো অসংখ্য ক্ষুদ্র ও বৃহৎ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কাছ থেকে বৈধ লাইসেন্স নিয়েই এসব এলাকায় নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে, সম্প্রতি সময়ে গুলশান বনানীর মতো অভিজাত এলাকায় ভুঁইফোড় ও হলুদ সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কিছু সাংবাদিক নামধারী ব্যক্তির দ্বারা প্রতারণার শিকার হচ্ছে তারা।

তথাকথিত আইপিটিভি (ইউটিউব), নিউজ পোর্টাল, যত্রতত্র ফেসবুক লাইভ, প্রেস লেখা স্টিকার, আইডি কার্ড ঝুলিয়ে অবাধে চলাচল করছেন কিছু ভুঁইফোড় সাংবাদিক। অথচ তাদের এসব চ্যানেলের কোনো অনুমোদন নেই, তাদের নেই কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতাও। শুধুমাত্র পেশা পরিবর্তন করেই হয়ে যাচ্ছেন সাংবাদিক।

মাছের পোনা বিক্রেতা, কাঠমিস্ত্রি, মুদি দোকানদার, হলুদ মরিচ বিক্রেতা, সুদ কারবারি, ব্যাটারি বিক্রেতা, চিকিৎসকের সহকারী থেকে রাতারাতি সাংবাদিক হয়ে তারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন গুলশান-বনানীর অলিগলি। সংবাদ লিখতে না পারলেও গলায় ক্যামেরা ঝুলিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কথিত এসব সাংবাদিকরা। এমনকি সাংবাদিকতার বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও তাদের নেই।

অনিবন্ধিত অনলাইন নির্ভর কিছু মাধ্যমে এসব কথিত সাংবাদিকরা সেসব প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড দেখিয়ে স্থানীয় কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে যাচ্ছে দিনের পর দিন।

গুলশানের কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, প্রায়ই আমাদের ফোন দিয়ে এমন কিছু পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেন, যেগুলোর নাম আমরা কখনো শুনিনি। ওইসব পত্রিকার সাংবাদিক দাবি করে তারা চাঁদা চান। দুই-একটি পত্রিকার সাংবাদিক ও তাদের নাম না বললে নয়। এর মধ্যে রিপন রুদ্র (কর্মক্ষেত্র), মোহন (তরুণ কণ্ঠ), সরকার জামাল (প্রতিদিন খবর), শাহাদাত মিজি (অগ্নিশিখা), হুমায়ুন কবির (এশিয়া বার্তা), শামীম আহমেদ (যুগযুগান্তর), সাদ্দাম হোসেন মুন্না (জনতার টিভি, প্রতিদিনের নতুন কাগজ)।

এছাড়া আশরাফুল আলম, বাবু, শান্ত, আলাউদ্দিন, সুমন, শুভ, শারমিন আক্তার সায়মা- এরা নির্দিষ্ট কোনো পত্রিকায় কাজ করেন না। তবুও নিজেদের সাংবাদিক দাবি করেন বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।

এসব নামধারী সাংবাদিকদের জন্য সাংবাদিকতার মতো পেশা আজ হুমকির মুখে। তাই এসব ভুঁইফোড় পত্রিকা ও নামধারী সাংবাদিকদের দ্রুত আইনের আওতায় না আনা গেলে সাংবাদিকতার মতো মহান পেশার মানুষগুলো অপমানিত হবে বলেও জানান গুলশান-বনানীর স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভুঁইফোড় অনিবন্ধিত পত্রিকার কোনো লোক সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে চাঁদা দাবি করলে ৯৯৯ ফোন দিয়ে ধরিয়ে দিন। তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সবাইকে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২৩
এমকে/এমএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।