রাজশাহী: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পেজ খুলে ঋণ দেওয়ার নামে প্রতারণা করায় রাজশাহীর তিন যুবককে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন আদালত।
রোববার (৪ জুন) দুপুরে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জিয়াউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার দুই আসামির সাজা হাজতবাসমূলে বাদ যাবে। পলাতক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিতের নির্দেশ দেন বিচারক।
প্রতারণার দায়ে অভিযুক্তরা হলেন- সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াস উপজেলার তাড়াস খাঁ পাড়া গ্রামের রাব্বি শাকিল ওরফে ডিজে শাকিল (৩২) ও একই উপজেলার কুসুমবি গ্রামের হুমায়ুন কবীর (২৮) এবং নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার গাড়ীক্ষেত্র গ্রামের হারুন রশিদ ওরফে সাইফুল (২৬)।
রোববার বিকেলে রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বেগম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, রায়ে আসামি শাকিলকে একটি ধারায় পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাকে।
অপর একটি ধারাতেও শাকিলকে একই মেয়াদের জেল-জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া তার সহযোগী আসামি হারুন ও হুমায়ুনকে একটি ধারায় এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অপর এক ধারাতেও তাদের একই কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছেন আদালত।
আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে দেওয়া এই সাজা পর্যায়ক্রমে একটার পর অন্যটা কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন বিচারক। রায় ঘোষণার পর আসামি শাকিল ও হারুনকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায় কোর্ট পুলিশ।
অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বেগম আরও বলেন, মামলার এজাহারে ঋণ দেওয়ার নামে প্রতারণা করে ১৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল। ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর শাকিল ও হারুনের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় এ ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। মামলার বাদী বগুড়ার বাসিন্দা আমানত উল্লাহ তারেক। পরে তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে মামলার চার্জশিট জমা করে। এতে নতুন আসামি হিসেবে হুমায়ুন কবীরকে মামলায় সংযুক্ত করা হয়।
মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, তিনি ও আশিক দৌলাতানা অভি নামের আরেক ব্যবসায়ী ‘ইন্টারন্যাশনাল লোন সার্ভিস’ নামে ফেসবুকে একটি পেজ থেকে ঋণ দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখেন। এরপর যোগাযোগ করলে তাদেরকে মোট সাড়ে চার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়। এ জন্য ইন্টারন্যাশনাল লোন সার্ভিসের পক্ষ থেকে শাকিল ও হারুন তাদের বাড়িও পরিদর্শন করেন। এরপর শাকিল ও হারুনকে ৫ শতাংশ কমিশন দিলে তারা সেই ঋণ অনুমোদন করে দিতে চান। এই ফাঁদে ফেলে তারা ১৪ লাখের বেশি অর্থ হাতিয়ে নেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২৩
এসএস/এমজে