ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

হঠাৎ ক্ষেপে গিয়ে অধ্যক্ষ জানতে চাইলেন, এই বেয়াদব কে?

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৭ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২৩
হঠাৎ ক্ষেপে গিয়ে অধ্যক্ষ জানতে চাইলেন, এই বেয়াদব কে?

বরিশাল: আগামী ২৪ জুনে অনুষ্ঠিতব্য তারু‌ণ্যের সমা‌বেশ সফল কর‌তে বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজে লিফলেট বিতরণের অনুমতি চাইতে কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মু. মোস্তফা কামালের কক্ষে যান ছাত্রদলের নেতারা।  

এ সময়ে অধ্যক্ষের কক্ষে ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে বাদানুবাদ হয়।

যা একটি ভিডিও ইতোমধ্যে ভাইরাল।  

ভিডিওতে এক পর্যায়ে হঠাৎই অধ্যক্ষকে ক্ষুব্ধ হতে দেখা যায়। এসময় তাকে বলতে দেখা যায়, এই বলে কি বেয়াদপের মতো!  আমি কি বলেছি কথা বলবো না, এই বেয়াদব কে? প্রিন্সিপালের রুমে বেয়াদবি করছে কে? এই বেয়াদবকে বের করো।

ভিডিওর শুরুতে দেখা যায়, ক্যাম্পাসে মিছিল দেওয়ায় বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানানো হলো না - বিষয়টি কেমন হলো তা নিয়ে ছাত্রদল নেতাদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন তোলেন অধ্যাপক মু. মোস্তফা কামাল। এসময় ছাত্রদল নেতারা অধ্যক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, যে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেই অনুমতির জন্য অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সরাসরি এসেছেন। এরপর অধ্যক্ষ অধ্যাপক মু. মোস্তফা কামালকে কারও সঙ্গে ফোনে কথা বলতে দেখা যায় ওই ভিডিওতে।

তার মাঝেই স্থানীয় ছাত্রদল নেতারা কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলকে পরিচয় করিয়ে অধ্যক্ষকে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকেন, আগামী ২৪ জুন তারুণ্যের সমাবেশ সফল করার জন্য ক্যাম্পাসে লিফলেট বিতরণ করা হবে, এজন্য অনুমতি চাইতে আপনার কাছে এসেছি।

এরপরই ক্ষেপে যান অধ্যক্ষ।  

এসময় অধ্যক্ষ ছাত্রদল নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি তোমাদের রেখে কোনো পাবলিকের সঙ্গে কথা বলছি। আমি ফোনটা করে কথা বলছি। তা তোমরা দাঁড়াও অসুবিধা কি?

এরপর শাওন নামে এক ছাত্রদল নেতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এই শাওন তোমার সঙ্গে আমার পরিচয় আছে না, সম্পর্ক আছে না? তুমি আমাকে মাঝে মাঝে ফোন দেও না? তো আজকে একটা ফোন আমাকে দিতে পারলা না।  

তখন শাওন বলেন, স্যার অনুমতি নেয়ার জন্যই আসছি।

এরপর কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল সবাইকে থামিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেন।  

এসময় তিনি বলেন, আমি আপনার সীমাবদ্ধতা বুঝি, রাজনৈতিক বাস্তবতা আমরা বুঝি। আপনি আমাদের কতটুকু অ্যালাউ করতে পারবেন, পারবেন না সেটাও বুঝি।  

তখন অধ্যক্ষ বলেন, আমি তোমার সঙ্গে কথাও বলতে পারবো না। এর উত্তরে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা বলেন, এজন্য আমি বলেছি স্যারের কাছে আগে যাই, সৌজন্য আলাপটা করে আসি।

এরপর আরও কিছু কথা বিনিময়ের পর কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও স্থানীয় ছাত্রদল নেতা শাওনের সঙ্গে কথা বলতে চান জানিয়ে অধ্যক্ষ বাকি সবাইকে কক্ষের বাইরে যাওয়ার কথা বলেন।

এর কিছুক্ষণ পর অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে বের হয়ে কেন্দ্রীয় ও  স্থানীয় ছাত্রদলের নেতারা স্লোগান দিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করে বের হয়ে যান।

এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মু. মোস্তফা কামাল বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নেতাসহ স্থানীয় কোনো নেতাই খারাপ আচরণ করেনি। তবে যে ছেলেটার কথায় আমি রাগ হয়েছি, সে তাদের কিনা তাও বলতে পারব না। হয়ত বাইরের কেউ হতে পারে।  

তাদের আমি বলেছিলাম যে, আগে তাদের আগমনের বিষয়টি জানালে তা সম্পর্কে আমি অবগত থাকতাম। হঠাৎ তাদের আগমনে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতেও তো পারতো।

এদিকে অধ্যক্ষের কক্ষ থেকে বের হয়ে মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপ‌তি ত‌রিকুল ইসলাম তারেক জানান, ক‌লেজ এলাকায় তারু‌ণ্যের সমা‌বেশ সফল কর‌তে লিফ‌লেট বিতর‌ণের অনুম‌তি চাইতে যাওয়া হয় অধ‌্যক্ষের রু‌মে। এক পর্যা‌য়ে অধ‌্যক্ষ কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদ‌কের সাম‌নে নেতাকর্মীদের ওপর ক্ষিপ্ত হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২৩
এমএস/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।