ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা কামারপাড়ায়, জমজমাট হোগলা-খাইট্টা ব্যবসা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৭ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২৩
শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা কামারপাড়ায়, জমজমাট হোগলা-খাইট্টা ব্যবসা

বরিশাল: পবিত্র ঈদুল আজহা বৃহস্পতিবার (২৯ জুন)। এ দিন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের উদ্দেশে পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন।

পশু কোরবানির জন্য অন্যতম অনুষঙ্গ হলো ছুরি-চাপাতি, কাঠের গুঁড়ি বা খাইট্টা ও হোগলা পাটি। আর তাই কোরবানির ঈদের আগ মুহূর্তে এসব কিছুর কদর বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পশু জবাই থেকে শুরু করে মাংস কাটার জন্য দরকারি ধারালো ছুরি, চাপাতি, দা, বটিসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের জন্য প্রতিবছরই এ সময়টাতে সরগরম হয় কামারপাড়া। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। তবে অন্যান্য জিনিসপত্রের দামের উত্তাপের আঁচ লেগেছে এখানেও। এবার প্রতিটি সরঞ্জামের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। শেষ মূহূর্তে বরিশালের সরঞ্জাম কেনাবেচার হাট জমজমাট দেখা গেছে।

বুধবার (২৮ জুন) বরিশাল নগরের বাজার রোডের বাশেঁর হাটখোলার ও চাঁদমারী এলাকার কামারপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, দোকানগুলোতে সাজিয়ে রাখা হয়েছে গরু জবাইয়ের ছোরা, দেশি-বিদেশি চাপাতি, বিভিন্ন সাইজের চাকু।

দোকানিরা জানান, মান ও আকারভেদে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে লোহায় তৈরি এসব পণ্য। তবে পিস হিসেবে কিনতে দেখা গেছে ক্রেতাকে। আবার কোরবানির পশু জবাই ও চামড়া ছোলার জন্য ধারালো ছুরি, মাংস কাটার জন্য চাপাতি তেমনি হাড় কাটার সুবিধার্থে প্রয়োজন হয় গাছের গুঁড়ি। আর এসব রাখার জন্য দরকার পড়ে হোগল পাটি বা চাটাইয়ের। গ্রামে এসবের অনেক কিছু হাতের নাগালে থাকলেও বরিশাল নগরে কোরবানি দেওয়া নাগরিকদের সবকিছুই কিনতে হয়। ফলে কোরবানির সময় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা এসব নিয়ে হাজির হন অলিতে গলিতে। কিন্তু এসবের দাম বেশ চড়াই থাকে সবসময়।

বুধবার (২৮ জুন) নগরের বাজার রোড, রুপাতলি, বাংলাবাজার, চৌমাথা এলাকায় দেখা গেছে গুঁড়ি ও হোগলা পাতার তৈরি চাটাইসহ  নানা সামগ্রী নিয়ে বসে আছেন মৌসুমের বিক্রেতারা। নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এসে এসব গুঁড়ি ক্রয় করছেন।

বিক্রেতারা বলছেন, পশু জবাইয়ের পর পরিচ্ছন্নভাবে মাংস ভাগ-বাটোয়ারা টুকরা করতে গাছের গুঁড়ি বেশি প্রয়োজন হওয়ায় সর্বত্রই এর কদর বেড়েছে। এরমধ্যে তেঁতুল গাছের গুঁড়ির কদর রয়েছে সবচেয়ে বেশি। গাছের গুঁড়ি মূলত তেঁতুল, নিম, করইসহ বিভিন্ন গাছের হয়। এরমধ্যে ক্রেতাদের কাছে তেঁতুল গাছের গুঁড়ি রয়েছে সবার ওপরে। এক একটি গাছের গুঁড়ি ১ ফুট বা সোয়া ফুট লম্বা রাখা হয়। প্রতিটি গাছের গুঁড়ি ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

স্বরুপকাঠী থেকে আসা কাঠ ব্যবসায়ী জলিল বলেন, গত কয়েক বছর ধরে তেঁতুল গাছ পাওয়া বড়ই দুষ্কর হয়ে উঠেছে। ফলে তেঁতুল গাছের তৈরি গুঁড়ির দাম একটু বেশি নেয়া হচ্ছে।

অপর দিকে নগরের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার পাশে বসেছেন চাটাইয়ের হাট। হোগলা পাতার সংকট থাকায় চাটাইয়ের দাম তুলনামূলক একটু বেশি। বিভিন্ন চরাঞ্চলে তেমন হোগলা না জন্মানোর কারণে ঠিকমতো হোগলা পাতা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই তারা বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকা থেকে হোগলাপাতা ক্রয় করে আনা ও বোনা পর্যন্ত খরচের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার ফলে বড় সাইজের একটি চাটাই বিক্রি করছেন ২০০ থেকে ৪০০ টাকা। আর মাঝারি সাইজের বিক্রি করছেন ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২৩
এমএস/জেএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।