ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

কোরবানি এলেই বাড়ে মৌসুমি কসাইদের কদর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৮ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২৩
কোরবানি এলেই বাড়ে মৌসুমি কসাইদের কদর

রাজশাহী: কোরবানি মৌসুমে সামর্থ্য অনুযায়ী মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেক মানুষই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু কোরবানি করছেন। কিন্তু বেশিরভাগ পরিবারেই পশু জবাই ও কাটাকুটির লোক নেই! তাই কী আর করা; অগত্যায় পড়ে মৌসুমি কসাই ভাড়া করতে হয়েছে অনেককে।

কারণ আজকের দিনে গরুর চামড়া ছাড়ানো আর গোশত কাটাকুটির জন্য তারাই সবার ভরসা। তাই শহরের সব কূলেই আজ কদর বেড়েছে তাদের।

তারা আজ একদিনের হিরো। ঈদ উপলক্ষে কসাইখানা বন্ধ থাকায় চুক্তিতে শ্রম দিচ্ছেন এ কোরবানির ঈদের বাজারে। আজকে সবচেয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

মহানগরীর শালবাগান এলাকার ব্যবসায়ী মোকলেসুর রহমান জানান, তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে থাকেন রাজধানী ঢাকায়। আর মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে। তিনি একা মানুষ। তাই কোরবানির দিন গরুর গোশত কাটাকুটির জন্য বাধ্য হয়েই পেশাদর কসাই ভাড়া করেছেন। তার একটি গরু ও একটি খাসি আছে। এজন্য দুইজন এসেছেন তিন হাজার টাকা চুক্তিতে। সঙ্গে গোশতও দিতে হবে।

নিউমার্কেট সুলতানাবাদ এলাকার রশিদুল হক বলেন, তিনি দুই হাজার টাকা চুক্তিতে তার কোরবানির গরুর জন্য পেশাদার কসাই ভাড়া করেছেন। তবে তারা বেশি সময় দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছে। কারণ তার আরও চারটি চুক্তি রয়েছে। তাই এসেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন। কিছু করার নেই। তাড়াতাড়ি হলে তারই ভালো বলে মন্তব্য করেন।

মহানগরীর শিরোইল শান্তিবাগ এলাকার অধিবাসী তুফান শেখ বলেন, বছরের কোনোদিনই ধারাল ছুরি-চাকুতে হাতই দেন না। এজন্য আজকের দিনে নিজ হাতে পশু কোরবানি করা, চামড়া ছাড়ানো ও গোশত তৈরির কাজ তার জন্য করা অসম্ভব! সে কারণে এক সপ্তাহ আগেই মৌসুমি কসাই ভাড়া করেছেন। একজন মূল কসাই আছেন। তার সঙ্গে সহযোগী রয়েছেন আরও দুজন। এ তিনজনকে তাদের কাজের পারিশ্রমিক হিসেবে দিতে হচ্ছে আড়াই হাজার টাকা এবং ২ কেজি করে গোশত। তবে এর বিনিময়ে তারা খুব অল্প সময়ের মধ্যে কোরবানির সব কাজ শেষ করে দিচ্ছেন। গোশত তৈরিন পর ওজন দেওয়া এবং ভাগ করা থেকে সবকিছুই করছেন তারা।

তবে কেবল মকলেসুর, রশিদুল হক বা তুফানই নন, শহরে ঘুরে দেখা গেছে রাজশাহীর মহানগরীর বেশিরভাগ পরিবারই আজ ভাড়া করেছেন মৌসুমি কসাই। তাই কোরবানির জন্য মৌসুমি কসাইয়ের কদর আজ তুঙ্গে। আগের বুকিং না থাকলে ফোন দিয়েও সারা মিলছে না তাদের। আর যাদের আগে থেকেই ভাড়া করা আছে তাদের কোনো টেনশনই নেই আজ।

ধারাল ছুরি-চাকু ও চাপাতি, চট-পাটির পুরো প্যাকেজ নিয়ে সাত সকালেই তারা বাড়ির আঙিনায় হাজির। চোখের পলকে চামড়া ছাড়ানো এবং কোরবানির গোশত তৈরির কাজ করছেন তারা। আর এজন্য যারা মৌসুমি কসাই ভাড়া করছেন। আর তাদের কোরবানির কাজ অন্যদের চেয়ে আগে হতে দেখা যাচ্ছে।

এদিকে, মহানগরীর সিরোইল কলোনি (বিহারি কলোনি) এলাকা থেকে কোরবানির কাজ করতে আসা জহির উদ্দিন কসাই জানান, কোরবানির দিন তাদের নিজের গোশতের ব্যবসা বন্ধ থাকে। তাই এ দিনটি তিনি ও তারা দুই সহযোগী মিলে অন্যদের কোরবানির কাজে সহযোগিতা করছেন। তবে এজন্য তাদের কোনো নির্ধারিত মজুরি নেই। যার কাছে যেমন পাওয়া যায় তেমনই টাকা নিচ্ছেন। আবার গরুর আকার অনুযায়ীইও পারিশ্রমিক চাচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২৩
এসএস/জেএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।