ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ৬ সদস্যের চিঠির প্রতিবাদ প্রবাসী বাংলাদেশিদের

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫২ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২৩
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ৬ সদস্যের চিঠির প্রতিবাদ প্রবাসী বাংলাদেশিদের

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতি-বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেলকে সম্প্রতি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য বাংলাদেশের নির্বাচন, মানবাধিকার ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যে চিঠি দিয়েছেন, তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইউরোপ প্রবাসী ৩২১ বাংলাদেশি।  

তারা বলেছেন, ওই চিঠি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে লেখা ও বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা মাত্র।

 

‘বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ইন ইউরোপ’ নামে একটি সংগঠনের নামে বোরেলকে পাল্টা চিঠিতে এ কথা বলেছেন তারা।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য ১২ জুন এ চিঠি দেন।  চিঠিদাতারা হলেন- ইভান স্টিফেনেক (স্লোভাকিয়া), মিকেইলা সিজদ্রোভা (চেক প্রজাতন্ত্র), অ্যান্দ্রে কোভাচভ (বুলগেরিয়া), কারেন মেলচিয়র (ডেনমার্ক), হ্যাভিয়ের নারত (স্পেন) ও হেইডি হাউতালা (ফিনল্যান্ড)।

৩২১ বাংলাদেশি তাদের চিঠিতে বলেছেন, চিঠিদাতা ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্যের বাংলাদেশের রাজনীতি ও সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। ইইউ পার্লামেন্টের দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের জন্য যে প্রতিনিধিদল রয়েছে, সেই সব কমিটির সদস্য না হয়েও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি খর্ব করতেই তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে চিঠিটি লিখেছেন।

বাংলাদেশিরা তাদের চিঠিতে বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হত্যার পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের সময় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও বলপূর্বক গুম শুরু হয়। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালে কয়েক হাজার সামরিক বাহিনীর সদস্যের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। জিয়ার বিএনপি সরকার বাংলাদেশের সংবিধান (পঞ্চম সংশোধনী) পরিবর্তন করে, যা ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ এবং ৯ এপ্রিল ১৯৭৯-এর মধ্যে সরকারের গৃহীত সব পদক্ষেপকে বৈধ করে। ১৯৯১-৯৬ ও ২০০১-০৬ সালে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অধীন বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকাকালে তারা বিরোধী দলের নেতাকর্মী, সাংবাদিক, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের নির্যাতন, অপহরণ ও হত্যার ধারা অব্যাহত রেখেছিল।

চিঠিদাতারা বলেন, ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচন প্রতিহত করতে বাংলাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। সেই সময় তারা শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তাদের পেট্রল বোমা, হাতে তৈরি বোমা ও অন্যান্য ধরনের সহিংসতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ২০ সদস্যসহ প্রায় ২০০ ব্যক্তি নিহত হয়। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন জোট নির্বাচনে অংশ নেয় এবং কয়েকটি আসনে জয়লাভ করে। অন্য সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। ‘মধ্যরাতের নির্বাচনের’ অভিযোগটি ছিল গুজব ও মিথ্যা তথ্যের কাজ, যা কখনো প্রমাণিত হয়নি।

বাংলাদেশিদের চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে আইনের শাসন ও মানবাধিকারের অবস্থা কেমন ছিল, তা সতর্কতার সঙ্গে যাচাই করা বাঞ্ছনীয় হবে। বিশেষ করে যদি ২০০১-০৬ সময়কালের কিছু ঘটনা বিবেচনা করা হয়, তাহলে একটি পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যায়। বার্লিনভিত্তিক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) দুর্নীতি উপলব্ধি সূচক (সিপিআই) অনুসারে, বিএনপির লাগামহীন দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের কারণে ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ পর পর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৫০ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।