ঢাকা: পবিত্র ঈদুল আজহার তৃতীয় দিন চলছে আজ। ঘরে ঘরে এখনও ঈদ আনন্দ।
এবার কোরবানির ঈদে সরকারি ছুটি ছিল চার দিন। গত ২৭ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটি এবং শনিবার (১ জুলাই) সাপ্তাহিক বন্ধ শেষে আগামী রোববার (২ জুলাই) খুলবে সরকারি অফিসগুলো। তবে বেসরকারি অফিসগুলো শনিবার থেকে খোলা ছিল। যার কারণে গত শুক্রবার (৩০ জুন) থেকে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবীরা। এছাড়া শ্রমজীবী ও ব্যবসায়ীরাও জীবিকার তাগিদে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন।
শনিবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও ফার্মগেট ঘুরে দেখা যায়, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী থেকে শুরু করে শ্রমজীবী ও ব্যবসায়ীদের অনেকে রাজধানীতে ফিরছেন। তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আন্তঃজেলা বাসে করে রাজধানীতে প্রবেশের পর সিটি বাসগুলোতে করে বাসা, কর্মক্ষেত্র ও গন্তব্যে যাচ্ছেন।
তেমনি একজন হোটেলের বাবুর্চি মো. জহিরুল ইসলাম। বাড়ি শরীয়তপুরে। থাকেন রাজধানীর মিরপুর-১১ তে। ঈদের আগের দিন বাড়িতে গেছেন তিনি। আজ আবার জীবিকার তাগিদে রাজধানীতে ফিরেছেন।
বেলা ১১টায় ফার্মগেটে জহিরুলের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সকাল ৮টায় বাসে উঠে ১০টার দিকে বাবুবাজার ব্রিজ নেমেছি। সেখান থেকে একটি বাসে করে এখন ফার্মগেট এসেছি। এখন আরেকটি বাসে করে মিরপুর যাব।
জহিরুল বলেন, বাড়িতে বাবা, মা ও ভাইরা আছে। তাদের ছেড়ে আসতে তো ইচ্ছা করে না। কিন্তু আগামীকাল থেকে হোটেল খোলা। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও আসতে হলো।
বিদেশ যাওয়ার জন্য ফার্মগেটে একটি কোচিং সেন্টারে কোরিয়ান ভাষা শিখছেন মো. সাইফুল ইসলাম। তার বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দিতে।
তিনি বলেন, গত ২৭ জুন বাড়ি গেছি। আজ থেকে কোচিং খোলা। তাই ফিরে আসতে হয়েছে। চাইলে আরও দুদিন বাড়িতে থাকা যেত। কিন্তু এতে নিজেরই লস। তাই খারাপ লাগলেও পরিবার ছেড়ে রাজধানীতে ফিরে আসতে হয়েছে।
কারওয়ান বাজারের অনেক ব্যবসায়ী ঈদে বাড়ি যাননি। আবার যারা গেছেন তাদের বেশিরভাগই ফিরে আসেননি। তবে কিছু কিছু ব্যবসায়ী জীবিকার তাগিদে এরই মধ্যে নগরীতে ফিরে এসেছেন। তেমনি একজন সবজি বিক্রেতা খোরশেদ আলম। সকালে কারওয়ান বাজারে তাকে নিজের দোকানে সবজি সাজিয়ে রাখতে দেখা যায়।
খোরশেদ বাংলানিউজকে বলেন, গতকাল রাতে চাঁদপুর থেকে রাজধানীতে ফিরেছি। আমার দোকানে কোনও কর্মচারী নেই। তাই নিজেকেই ফিরে আসতে হলো। ঈদের আগের দিন রাতে বাড়ি গিয়েছিলাম। তাই ঈদের দিন ও ঈদের পরদিন দোকান বন্ধ ছিল। আজ আবার খুললাম।
খোরশেদের মতো ঈদের আগের দিন রাতে বাড়ি গিয়েছিলেন মুদি দোকানদার গাফফার হোসেন। তার বাড়ি কুমিল্লার লাকসামে।
তিনি বলেন, দোকানের কর্মচারীরা ছুটিতে। আসবে আরও তিন দিন পর। তাই নিজেকেই ঈদের পর পর ফিরে আসতে হয়েছে।
পরিবার ছেড়ে আসতে খারাপ লাগেনি জানতে চাইলে তিনি বলেন, খারাপ লাগলেও কিছু করার নেই। দোকান না খুললে লস। তাই বাধ্য হয়ে আসা। কর্মচারীরা এলে তখন আবার দুই-তিন দিনের জন্য বাড়িতে যাব।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০২৩
এসসি/আরবি