ঢাকা: গ্রীষ্ম শেষে বর্ষা এসেছে ধরণীতে। আম-কাঁঠালসহ বিভিন্ন দেশি ফলের মৌসুমও প্রায় শেষের পথে।
বাংলা দিন পঞ্জিকার জ্যৈষ্ঠ মাসকে বলা হয় মধু মাস। কারণ এই সময় আম-জাম-কাঁঠালসহ বিভিন্ন দেশি ফলের ভরা মৌসুম থাকে। এসব ফলের গন্ধে মৌ মৌ করে চারদিক। বাজারও সয়লাব হয়ে যায় বিভিন্ন দেশি ফলে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রায় পুরোটা জুড়েই বাজার সয়লাব ছিল আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু ও আনারসে। মৌসুম শেষ হওয়ায় এখন ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে এসব ফল। এমনকি বেশিরভাগ বাজারে লিচুই নেই। বাজারে সরবরাহ কমতে থাকায় বাড়তে শুরু করেছে এসব মৌসুমি ফলের দাম।
শুক্রবার (৭ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে গ্রীষ্ম মৌসুমের দেশি ফলের মধ্যে প্রতি কেজি আম্রপালি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৩০ টাকা, হাড়িভাঙ্গা আম বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা, সুরমা ফজলি আম বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বারি-৪ জাতের আম বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, জাম ৩০০ টাকা, কালো তরমুজ ৫০ টাকা। আকারভেদে প্রতি পিস কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকায়।
বর্ষা মৌসুমেরও বিভিন্ন ফল ইতোমধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে। এর মধ্যে প্রতি কেজি গাব ১৪০ টাকা, লটকন ২০০ থেকে ২২০ টাকা, আমড়া ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া সারা বছর পাওয়া যায় এমন ফলের মধ্যে আনারস প্রতি পিস ২৫ থেকে ৬০ টাকা, পেয়ারা প্রতি কেজি ৯০ টাকা, পেঁপে ৮০ থেকে ১৫০ টাকা, প্রতি ডজন বাংলা কলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, সরবি কলা ৯০ থেকে ১০০ টাকা ও সাগর কলা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, যখন যে ফলের ভরা মৌসুম থাকে, তখন সেই ফলের দাম কম থাকে। গ্রীষ্মকালীন ফলের মৌসুম শেষ হওয়ার পথে, তাই ধীরে ধীরে দাম বাড়ছে। আবার বর্ষা মৌসুমের ফলও এখনো ঠিকমতো বাজারে না ওঠায় সেগুলোর দাম বেশি। যখন বাজারে বর্ষা মৌসুমের ফলের সরবরাহ বাড়বে তখন দাম কিছুটা কমবে।
মো. সাইদুল নামের এক বিক্রেতা বলেন, বাজারে এখন আর লিচু নেই। হিমসাগর ও ল্যাংড়া আমেরও মৌসুম শেষ, তাই বাজারে নেই। এখন আম্রপালি ও হাড়িভাঙ্গা আম আছে। আগামী ১৫ দিন এগুলো থাকবে। এরপর উঠবে ফজলি, তারপর আশ্বিনী। আমের মৌসুম পুরোপুরি শেষ হতে এখনো দুই মাসের বেশি বাকি। তবে আমের ভরা মৌসুম শেষের পথে।
মো. দুলাল নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, গ্রীষ্ম মাসের ফল প্রায় শেষের পথে। আবার বর্ষার ফল এখনো পুরোপুরি আসেনি। ফলে দুই মৌসুমের ফলের দামই এখন বেশি। বর্ষা মৌসুমের ফলের মধ্যে আমড়া, লটকন, গাব এগুলো উঠতে শুরু করেছে। আরো কয়েক দিন পর এগুলোর দাম কমবে।
রবিউল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, ঈদের জন্য মাঝের কয়েক দিন ফল কেনা হয়নি। আজ আবার বাচ্চাদের জন্য আম নিলাম। এখনই আমাদের মতো মধ্যম আয়ের লোকেরা ফল কিনতে পারবো। দাম বেড়ে গেলে, তখন নেওয়া কঠিন হবে। এজন্য যত দিন দাম হাতের নাগালে থাকে পরিবারের সবাই মিলে দেশি ফলের স্বাদ নিতে চাই।
এদিকে বাজারের তুলনায় ভ্যানে দুই মৌসুমের ফলই কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২৩
এসসি/এসআইএস