ঢাকা: এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত বাংলাদেশ আই হসপিটালকে জরিমানা করেছেন দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
একই কারণে কনকর্ডের নির্মাণাধীন একটি ভবনকেও জরিমানা করা হয়।
সোমবার (১০ জুলাই) এ অভিযান পরিচালনা করে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। জানা গেছে, এডিসের লার্ভা পাওয়ায় বাংলাদেশ আই হসপিটালকে ৩০ ও কনকর্ডের নির্মাণাধীন ভবনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তা ছাড়া এডিস মশার লার্ভা নিধনে আটটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ২৩ মামলায় দুই লাখেরও বেশি জরিমানা আদায় করেছে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।
সোমবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযান পরিচালিত হয় ধানমন্ডি ৩০, গোপীবাগ, ঝিগাতলা, বংশাল, মানিকনগর, স্বামীবাগ, মান্ডা, নতুন পাড়া, ডেমরা, রসুলপুর, কুতুবখালী, ধনিয়া ও যাত্রাবাড়ী এলাকাতেও।
এক নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মঞ্জুরুল হক পরিচালিত আদালত ধানমন্ডি ৩০ এলাকার ৩০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন। এ সময় ধানমন্ডির বাংলাদেশ আই হাসপাতাল, কনকর্ড রিয়েল এস্টেট কর্তৃক নির্মাণাধীন একটি ভবনসহ মোট তিনটি স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা পায়। এ সময় আই হাসপাতালকে ৩০ ও কনকর্ড রিয়েল এস্টেট কর্তৃক নির্মাণাধীন ভবনের দায়িত্বরত প্রকৌশলীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া আরেকটি ভবনের দায়িত্বরত তত্ত্বাবধায়ককে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আরোপ ও তা আদায় করেন।
দুই নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এম আর সেলিম শাহনেওয়াজ ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গোপীবাগ এলাকায় ৫৫টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন। আদালত এ সময় দুটি স্থাপনায় লার্ভা পাওয়ায় দুই মামলায় ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
তিন নম্বর অঞ্চলে করপোরেশনের প্রধান সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দিন ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঝিগাতলা এলাকায় ২৬টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে দুটি স্থাপনায় লার্ভা পান। দুই মামলায় ১১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন তিনি।
চার নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানার আদালত ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বংশাল এলাকার ২০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন। দুটি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ২ মামলায় পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
পাঁচ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সফি উল্লাহ ৭ ও ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের মানিকনগর ও স্বামীবাগ এলাকায় ২৬টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ২টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় দুই মামলায় ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
সাত নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নজরুল ইসলাম ৭১ নম্বর ওয়ার্ডের মান্ডা এলাকায় ৯৫টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ৫টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় পাঁচ মামলায় ১৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
নয় নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন পাড়া ও ডেমরা ৫২টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ৩টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় তিন মামলায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
দশ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর আলম ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের রসুলপুর, কুতুবখালী, ধনিয়া ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় ২৩টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং চারটি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ৪ মামলায় ১৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
এসব অভিযানে সর্বমোট ৩২৭টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়েছে। এ সময় ২৩টি বাসাবাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় ২৩ মামলায় সর্বমোট ২ লাখ ১৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
এদিকে আজ হতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার স্কুল কলেজসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙিনায় এডিস মশার লার্ভা নিধনে হতে বিশেষ চিরুনি অভিযান পরিচালনা শুরু হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে সচেতনতা সৃষ্টিতে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি দক্ষিণ সিটির ৩০টি ওয়ার্ডে তিনদিনব্যাপী বিশেষ চিরুনি অভিযানও চলমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২৩
এইচএমএস/এমজে