ময়মনসিংহ: নামমাত্র কার্পেটিং করে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার অম্বিকাগঞ্জ সার বাজার সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসী ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)।
গত ৩১ জুন দুদক ময়মনসিংহের উপ-পরিচালক বরাবর এ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাইফ এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে অনিয়মের এ অভিযোগ করেন আজিম উদ্দিন, সিরাজ, বাবুল হোসেনসহ স্থানীয় চার ব্যক্তি। তবে অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করলেও এনিয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি দুদক কর্মকর্তারা।
লিখিত চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, অম্বিকাগঞ্জ ইউনিয়নের সার বাজার থেকে পরানগঞ্জ বাজার পর্যন্ত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে প্রায় পৌনে তিন কিলোমিটার (২৬০০ মিটার) সড়ক নির্মাণ কাজ চলছে। এর মধ্যে প্রায় দুই কিলোমিটার (১৯০০ মিটার) সড়কের প্রশস্ততায় দুই পাশে তিন ফুট করে মোট ছয় ফুট বাড়ানোর কথা রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নতুন ইট বা সুড়কি ব্যবহার না করে রাস্তার পুরোনো সুড়কি উঠিয়ে তা ছড়িয়ে দিয়ে দায়সারাভাবে কার্পেটিং করা হচ্ছে। এতে সড়কটি আগের চেয়ে নিচু হয়ে গেছে।
স্থানীয় মীরকান্দা গ্রামের আফাজ উদ্দিন ও সাইদুল ফকির অভিযোগ করেন, কাজের দরপত্র অনুযায়ী এ সড়কের কার্পেটিং ২৫ মিলি করার কথা থাকলেও বাস্তবে করা হয়েছে ১৮ থেকে ২০ মিলি পর্যন্ত। সেই সঙ্গে সড়কের মেকাডম (ভাঙা ছোট পাথর/খোয়া বিছিয়ে পিচ ঢালাই) আগের ছয় ইঞ্চির ওপর আরও দুই ইঞ্চি বাড়িয়ে আট ইঞ্চি করার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হচ্ছে না। কাজ যথাযথ তদারকি করলে অভিযোগের প্রমাণ মিলবে।
মীরকান্দা গ্রামের নীল মাহমুদ (৮০) নামে এক ব্যক্তি জানান, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটিতে এতো নিম্নমানের কাজ হতে পারে না। সড়কের ব্যবহৃত সুড়কি তুলে তা নতুন করে ছিটিয়ে ওপর দিয়ে কার্পেটিং করা হয়েছে। কয়েকদিন গেলেই এ সড়ক আবার ভেঙে যাবে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মেসার্স সাইফ এন্টারপ্রাইজের মালিক সাইফ বলেন, আগে এ সড়কটি চলাচলের উপযোগী ছিল না। তাই এক কোটি ৭৬ লাখ টাকা বরাদ্দে সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। কাজ যে রকম করার কথা, আমি সে রকমই করছি। আপনার (বাংলানিউজের এ প্রতিবেদক) সঙ্গে দেখা করে এসব বিষয়ে পরে কথা বলব।
সড়কটির তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শুনেছি স্থানীয় একটি পক্ষ ঠিকাদারের সঙ্গে শত্রুতা করে এ ধরনের অভিযোগ করছে।
এসময় এ নির্মাণ কাজের বরাদ্দের পরিমাণ জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, এতো কিছু আমার মনে নেই। নথি দেখে বলতে হবে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, নিম্নমানের কাজ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০২৩
এসআই