ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

খানা-খন্দে ভরা রাস্তা, বৃষ্টি হলেই দুর্ভোগ

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০২৩
খানা-খন্দে ভরা রাস্তা, বৃষ্টি হলেই দুর্ভোগ

সিরাজগঞ্জ: খালি রিকশা চালিয়ে যাচ্ছিলেন রাসেল। রাস্তায় খানা-খন্দ দেখে খুব সাবধানে চালিয়ে আসার পরও গর্তের কাদায় আটকে পড়ে রিকশাটি।

ঠেলে রিকশাটি গর্ত থেকে তুললেও পুরো রাস্তাজুড়ে এমন একাধিক গর্তের কারণে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় তাকে।  

সিরাজগঞ্জ পৌরসভার এসবি ফজলুল হক রোডে এসে রাসেলের মতো বিড়ম্বনায় পড়তে হয় রিকশা, অটোরিকশা, ইজিবাইক, ট্রাক, কার-মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের। বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। কাদা-পানিতে পুরো সড়ক যেন চাষযোগ্য জমিতে পরিণত হয়। তারপরও শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ায় দুর্ভোগ মাথায় নিয়েই প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করছে।  

জানা যায়, ১৯৯২ সালে ক শ্রেণির মর্যাদা লাভ করা সিরাজগঞ্জ পৌরসভার প্রধান তিনটি সড়কের মধ্যে এসবি ফজলুল হক রোড একটি। নিউ ঢাকা রোডের রেলগেট থেকে যমুনা নদীর জেলখানা ঘাট পর্যন্ত প্রায় ২৩০০ মিটারের এ রুটটি অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল, জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, বক্ষব্যধি হাসপাতাল, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, সালেহা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বিএল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, জাহান আরা উচ্চ বিদ্যালয়, ইসলামিয়া সরকারি কলেজ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল, নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ একাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের অন্যতম সড়ক এটি। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে বিভিন্ন কাজে চলাচল করতে হয় এ রুট দিয়ে।  

এসবি ফজলুল হক রোডের গোশালা মণ্ডলপাড়া, গোশালা কালিমন্দির, জাহানারা স্কুল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পুরো রাস্তার কার্পেটিং উঠে গেছে, সৃষ্টি হয়েছে খানা-খন্দ। এসব খানা-খন্দ কোথাও কোথাও বিশাল গর্তে রূপ নিয়েছে। বৃষ্টির পানিতে গর্তগুলো ভরে গেছে, রয়েছে কাদাও। নানা দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যানবাহন চলছে এ রাস্তায়।  

কথা হয় ট্রাকচালক সেলিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রায় বছরখানেক ধরেই এ সড়কটির বেহাল অবস্থা। অনেক ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা দিয়ে চলতে হচ্ছে। মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে।  

ইজিবাইকচালক মানিক, অটোরিকশাচালক আব্দুল্লাহ, রিকশাচালক আমিনুল, সায়েদসহ চালক ও যাত্রীরা রাস্তার এমন অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।  

তারা বলেন, যেখানে সরকার সারাদেশের রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে, সেখানে সিরাজগঞ্জ পৌরসভা ব্যতিক্রম। এ রাস্তার অবস্থা দেখে কেউ ভাবতেই পারবে না, প্রথম শ্রেণির পৌরসভার সড়ক এটি।  

সিরাজগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, শিগগিরেই সড়কটি সংস্কারের জন্য টেন্ডার ডাকা হবে। এছাড়া সড়কটির উন্নয়নের জন্য বড় একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এস এস রোড কিংবা মুজিব সড়কের মতো প্রশস্তকরণ, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ফুটপাথ নির্মাণ, লাইটিংসহ বিভিন্ন উন্নয়ন করা হবে।  

সিরাজগঞ্জ পৌরসভা মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা বলেন, সিরাজগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো উন্নয়নে জার্মানি কেএফ ডাব্লিউয়ের অর্থায়নে ১৪০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ প্রকল্পের প্রথম টেন্ডার হবে এসবি ফজলুল হক রোড। এছাড়া বর্তমানে এ রুটসহ বিভিন্ন রাস্তা সংস্কারের জন্য পৌরসভার নিজস্ব অর্থায়নে ১৪০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ শিগগিরই শুরু হবে।   

বাংলাদেশ সময়: ১১২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।