খুলনা: খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের গ্রাজুয়েট হাইস্কুল থেকে হায়াত খালী বাজার পর্যন্ত ৩ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার পিচের রাস্তা নির্মাণ কাজের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
নিম্নমানের কাজ করতে বাধা দিতে গিয়ে ঠিকাদারের লোকজন ও স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে বলেন, রাস্তার সংস্কার করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি খোয়ার পরিমাণ কম দিয়ে অর্থাৎ নামমাত্র খোয়া দিয়ে বেশি পরিমাণ বালুর ব্যবহার করছে। দায়সারা কাজ করা হলে অল্পদিনের মধ্যেই রাস্তা দেবে যাবে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মৎস্য ব্যবসায়ীদের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম। এমনকি কৃষি কাজের জন্য কৃষকরা এই রাস্তা দিয়ে তাদের মালামালের গাড়ি বহন করার জন্য এ রাস্তা ব্যবহার করেন। এজন্য রাস্তা তৈরিতে উপকরণ কম এবং মালামাল নিম্নমানের হলে অল্প কিছু দিনের মধ্যে রাস্তাটি ব্যবহারে অযোগ্য হয়ে পড়বে। গ্রামবাসী বাধা দিতে গেলে ঠিকাদারের লোকজন তাদের ওপর চড়া হয়।
অন্যদিকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস আর ট্রেডার্সের প্রতিনিধি নাজমুল হোসেন বলেন, রাস্তা সংস্কার কাজে বাধা সৃষ্টি করার কারণে সাময়িক উত্তেজনা দেখা দেয়।
তবে নিম্নমানের কাজের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সড়ক নির্মাণে বড় ধরনের অনিয়ম হয়নি। তবে সড়কের এক পাশে বড় খাল রয়েছে। কাজ বাস্তবায়নে বেগ পেতে হচ্ছে। দুই/একটা জায়গায় সমস্যা হতে পারে।
কয়রা উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চার কোটি ৭৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা মূল্যে মেসার্স এস আর ট্রেডার্সের নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি বাস্তবায়ন করছেন। চলতি বছরের মার্চ মাসে কার্যাদেশ পেয়ে আগামী বছরের এপ্রিল মাসে কাজটি শেষ করার কথা রয়েছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, দায়সারাভাবে খোয়া-বালুর ব্যবহার করা হচ্ছে সড়ক নির্মাণ কাজে। এসবের প্রতিবাদ করতে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের ওপর চড়াও হয় ঠিকাদারের লোকজন। গ্রামবাসীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মিথ্যা মামলায় দিয়ে হয়রানির হুমকি দিয়েছে। কর্তৃপক্ষকে রাস্তাটির সংস্কার কাজ পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মমিনুর রহমান বলেন, এলাকাবাসীর একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।
রাস্তাটি সরেজমিনে দেখার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে বললে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার অভিযোগে বর্তমানে কাজটি বন্ধ রাখা হয়েছে। ঠিকাদারকে সঠিকভাবে কাজ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সড়কের গুণগত মান ঠিক করেই নির্মাণ কাজ শেষ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২৩
এমআরএম/এএটি