ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সিরাজগঞ্জে প্রথম স্মার্ট বিদ্যালয়

ঘরে বসেই স্কুলে পাঠানো সন্তানের তথ্য জানতে পারছেন অভিভাবক

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩
ঘরে বসেই স্কুলে পাঠানো সন্তানের তথ্য জানতে পারছেন অভিভাবক

সিরাজগঞ্জ: সন্তানকে স্কুলে পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে রয়েছেন সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার হৈমবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা। বেড়েছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার।

ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বাইরে ঘোরাফেরাও করতে পারছে না ছাত্রীরা।

জেলার প্রথম স্মার্ট বিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করা হৈমবালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে চলছে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা, অনলাইনে বেতন, ডিজিটাল ক্লাস, পরীক্ষা ফি গ্রহণ। মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে অভিভাবকরা নিশ্চিত হতে পারছেন তাদের মেয়েরা স্কুলে কখন যাচ্ছে, কখন স্কুল থেকে বের হচ্ছে। আর রশিদ সিস্টেম নয়, অনলাইনে বেতন বা পরীক্ষা ফি দিয়ে মেসেজের মাধ্যমে নিশ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।  

রোববার সরেজমিন হৈমবালা বালিকা বিদ্যালয়ে গেলে দেখা যায়, ছাত্রীরা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে পাঞ্চ মেশিনে নিজেদের আইডি কার্ড পাঞ্চ করে হাজিরা দিয়ে ক্লাসে প্রবেশ করছে। আইডি কার্ড পাঞ্চ করার পর ডাটা উঠে যাচ্ছে হাজিরা শিটে। সেইসঙ্গে একটি মেসেজ যাচ্ছে তাদের অভিভাবকদের মোবাইল ফোনে। অভিভাবকরা নিশ্চিত হচ্ছেন তাদের সন্তান বিদ্যালয়ে গিয়েছে কিনা। বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ। শিক্ষকরাও পাঠদান করে আনন্দ পাচ্ছেন।  

চলতি বছরের ১৮ জুলাই বিদ্যালয়টিকে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে স্মার্ট বিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের সময়মতো উপস্থিতি মূল্যায়ন রিপোর্ট, পরীক্ষার সিট প্লান, পরীক্ষার ফলাফল, বেতন ফি জমা দেওয়ার সব ভোগান্তি কাটিয়ে প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন সব কিছুই সহজে করা যাচ্ছে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ক্লাবসহ স্মার্ট বিদ্যালয়ের সব সুবিধাই পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।  

এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলে, আমাদের হৈমাবালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়কে জেলায় প্রথমবারের মতো স্মার্ট বিদ্যালয় ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে আমরা আইডি কার্ড পাঞ্চ করে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করছি। ফলে আমাদের বাবা-মা নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন। এতে বিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুন্দর পরিবেশ ফিরে এসেছে। কেউ ক্লাস ফাঁকি দিতে পারে না। আমরা এ বিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসেবে গর্বিত।   

অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, স্মার্ট স্কুল হওয়ার পর থেকে এই স্কুলে আমাদের সন্তানরা অনেকটাই নিরাপদ। কারণ মোবাইল মেসেজে আমরা জানতে পারছি মেয়ে এখন কোথায় আছে। তাছাড়াও বেতন, পরীক্ষা ফি, বিদ্যালয়ের যাবতীয় তথ্য জানতে পারছি অনলাইনের মাধ্যমেই। ফলে সবকিছু খুব সহজ হয়ে গেছে।  

প্রধান শিক্ষিকা মোছা. শামীম আরা বলেন, আমাদের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সিদ্ধান্তে বিদ্যালয়টি সিরাজগঞ্জে প্রথম স্মার্ট বিদ্যালয় করা হয়েছে। আইডি কার্ডে পাঞ্চ করে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করে। এতে উপস্থিতির হার অনেক বেড়েছে।  

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুলতান মাহমুদ জানান, সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ ঘোষণা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা স্মার্ট বিদ্যালয় ঘোষণা করেছি। স্মার্ট বিদ্যালয়ের সব সুযোগ সুবিধা শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগে বাচ্চারা স্কুলের নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়ে বান্ধবীদের সঙ্গে এখানে সেখানে ঘুরতে যেত। এখন আর সেটা পারে না। যে কারণে উপস্থিতির হার অনেক বেড়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।