ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় ফেল করেও চাকরি!

অপু দত্ত, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২৩
শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় ফেল করেও চাকরি!

খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃক সদ্য প্রকাশিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। লিখিত পরীক্ষায় পাস না করা প্রার্থীর রোল নম্বরও দেখা গেছে নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফলে (লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায়)।

জানা গেছে, চূড়ান্ত নিয়োগে লিখিত পরীক্ষায় ফেল করা এক প্রার্থীর রোল নম্বর রেখে ফলাফল প্রকাশিত হয়। এরপর কেঁচো কুড়তে গিয়ে সাপ বের হয়। কর্তৃপক্ষ তালিকা সংশোধন করে। কিন্তু ‘ভুলবশত’ পাঁচটি ক্রমিক নম্বর বাতিল করে দেয়। এরপর আবার নতুন চারটি ক্রমিক যুক্ত করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জেলা পরিষদ। এ নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। সমালোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অধীনস্থ শিক্ষা বিভাগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। গত ২২ সেপ্টেম্বর ১ হাজার ২৪৯ জনকে পাস দেখিয়ে লিখিত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। যেখানে ৭৭১ রোল নম্বর ছিল না। পরবর্তীতে গত ২ অক্টোবর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেই ফলাফলের ভিত্তিতে উত্তীর্ণদের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয় গত শুক্রবার (৬ অক্টোবর)। এ তালিকায় ৭৭১ ক্রমিকধারী চূড়ান্ত নিয়োগে চাকরি পান। অথচ তিনি ফেল করেছিলেন।

বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে গতকাল শনিবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে আগের বিজ্ঞপ্তির স্মারক তারিখ ঠিক করে সংশোধন আনা হয়। যেখানে ৭৭১ ক্রমিক বাতিল করা হয়। একই সঙ্গে বাদ পড়ে আরও চারটি ক্রমিক নম্বর বাতিল। পরে আরও চারটি ক্রমিক সংযোজন করে কর্তৃপক্ষ।

লিখিত পরীক্ষায় ফেল করা ৭৭১ ক্রমিক নম্বর বাতিল করার পাশাপাশি ১৪২, ১৬৫৪, ৩২১৬ ও ৩৮৩৮ নম্বর ক্রমিকও বাদ দেয় কর্তৃপক্ষ। নতুন করে সংশোধনীতে ৮৮৪, ২০৮২ ৩২৪৬ ও ৩৮৩৭ যুক্ত করা হয়।

বিষয়টিকে ‘প্রিন্টিং মিস্টেক’ বলে উল্লেখ করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব মো. সাহাবউদ্দিন। তিনি বলেন, আমি অসুস্থ থাকায় কাজটি তদারকি করতে পারিনি। গভীর রাতে কাজ করতে গিয়ে ভুলটা হয়েছে। পরে চেক করে দেখেছি আমাদের কয়েকটা ভুল ছিল। আমরা তা সংশোধন করে দিয়েছি। যারা টাইপ করেছে তারা একটা ক্রমিক দিতে গিয়ে আরেকটি দিয়ে ফেলেছে। আশা করি পরীক্ষায় অংশ নেয়নি বা ভাইভা দেয়নি এমন কাউকে পাবেন না।

এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে ‘ভুল’ বলে পাশ কাটানোর সুযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ভুল মানুষের হয়। জাতীয় পর্যায়েও এমনটা হয়। তবে আমি স্বীকার করছি এটি অনেক বড় ভুল হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এড়িয়ে যাচ্ছি না। আমাদের ভুল হয়েছে।

এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপুর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২৩
এডি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।