ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পাথরঘাটার শিংড়াবুনিয়ায় গণহত্যা দিবস পালিত

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৩
পাথরঘাটার শিংড়াবুনিয়ায় গণহত্যা দিবস পালিত

পাথরঘাটা (বরগুনা): পুষ্পমাল্য অর্পণ, শোক র‌্যালি ও আলোচনা সভার মধ্যে দিয়ে বরগুনার পাথরঘাটা 
শিংড়াবুনিয়ায় গণহত্যা দিবস পালন করা হয়েছে।  

মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বেলা ১০টায় পাথরঘাটা উপজেলা প্রশাসন, বরগুনা সেক্টর কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা-৭১, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধকে জানি’ এর উদ্যোগে সাত শহীদ স্মৃতি স্তম্ভে দিবসটি পালন করা হয়।

এসময় বক্তব্য দেন- পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ খালেক, পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আমিন সোহেল, নাচনাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন খান, উপজেলা কৃষি অফিসার শওকত হোসেন, নকুল বালা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক ও গবেষক শফিকুল ইসলাম খোকন।

১৯৭১ সালের ১০ অক্টোবর এই দিনে বরগুনার পাথরঘাটার শিংড়াবুনিয়া শহীদ পরিবারের ওপরে বর্বরোচিত পাক হানাদারের অত্যাচার ও গণহত্যার কথা আজও ভুলতে পারেনি তারা। সেদিন পাক হানাদার রাজাকার ও শান্তি কমিটির সহায়তায় গানবোট যোগে এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজতে এসে না পেয়ে ব্যাপারী বাড়ি, হাজরা বাড়ি, গয়ালী বাড়ি, বালা বাড়ি ও হাওলাদার বাড়ি, চারদিকে থেকে ঘেরাও করে চন্দ্র কান্ত হাজরা, অশ্বিনী কুমার বালা, লক্ষ্মিকান্ত গয়ালী, নিত্যানন্দ বেপারী, মনোরঞ্জন বেপারী, খিরত চন্দ্র বেপারি ও অনন্তু কুমার হালদারকে চোখ বেধে পার্শ্ববর্তী হরের খালে নিয়ে গিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে এবং তাদের ঘরে থাকা মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। সর্বশেষ পুড়িয়ে দেয় ঘরবাড়ি।  

প্রতি বছর ১০ অক্টোবর শিংড়াবুনিয়ায় গণহত্যা দিবস পালন করা হয়। এর আগে ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর শহীদদের স্মরণে ফারিয়ালারা ফাউন্ডেশন ও জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে নির্মাণ করা হয়েছিল স্মৃতিসৌধ। কিন্তু তা দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত থাকায় তৎকালীন বরগুনা সেক্টর কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা-৭১, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধকে জানি’ ও তৎকালীন বরগুনা জেলা প্রশাসক মুস্তাইন বিল্লাহ পুনরায় সংরক্ষণে এগিয়ে আসেন।

আমিন সোহেল বলেন, ১৯৭১ পালের ১০ অক্টোবর তৎকালীন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান ও মকবুল হোসেনের নির্দেশে পাকবাহিনীর সদস্যরা হাত-পা এবং চোখ বেঁধে নির্মমভাবে হত্যা করে হরের খালের পারে রেখে যায়। আজও সেই শহীদদের মূল্যায়ন করা হয়নি। তাদের পরিবারকে স্বাবলম্বী করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

সাংবাদিক ও গবেষক শফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, স্মৃতিসৌধের পাশেই একটি নতুন সেতু হয়েছে, যা তৎকালীন পুল ছিল। তাদের স্মরণে ‘সাত শহীদ স্মৃতি সেতু’ নামে নামকরণ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধাদের নামে বাড়ির সামনে সড়কের নামকরণ করা এখন সময়ের দাবি।

উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দেওয়া হচ্ছে কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আজও কোনো ভাতার আওতায় আনা হয়নি। সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি তাদেরও ভাতার আওতায় আনার জন্য।

তিনি আরও বলেন, স্মৃতিসৌধ মেরামতের কাজ এক সপ্তাহের মধ্যে শুরু করা হবে। সামনে সভায় ‘সাত শহীদ স্মৃতি সেতু’ নামে নামকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।