ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ব্র্যাকের মাধ্যমে ৭ বছরে অতি-দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেয়েছে ২০ লক্ষাধিক মানুষ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২৩
ব্র্যাকের মাধ্যমে ৭ বছরে অতি-দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেয়েছে ২০ লক্ষাধিক মানুষ

ঢাকা: ব্র্যাকের ‘গ্রাজুয়েশন অ্যাপ্রোচে’র মাধ্যমে সাত বছরে অতি-দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেয়েছে ২০ লক্ষাধিক মানুষ।

‘ব্র্যাক এসডিজি কন্ট্রিবিউশন ভলান্টারি রিভিউ ২০২৩’ রিপোর্টে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

এতে বলা হয়, সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়ে ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৯০টি পরিবারের ২০ লাখ ২০ হাজার মানুষকে ব্র্যাক তাদের ‘গ্রাজুয়েশন অ্যাপ্রোচ’ দিয়ে অতি-দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করেছে। এটা এই সময়ে অতি-দারিদ্র্য নিরসনে জাতীয় অর্জনের ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ। এ প্রক্রিয়ায় সফলতার হার ৯৬ দশমিক ৭ শতাংশ। এর বাইরে একই সময়ে ৩৫ লাখ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে ব্র্যাক তাদের এক বা একাধিক উদ্যোগের মাধ্যমে সেবা দিয়েছে। দুর্গম এলাকায় দুর্গত ১ লাখ ৫৭ হাজার ৮৯৬টি পরিবারের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহায়তা করেছে ব্র্যাক।

একই ভাবে ব্র্যাক ১৬টি উন্নয়ন কর্মসূচি এবং ৫টি সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে দেশজুড়ে দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ, মানসম্পন্ন শিক্ষা, লিঙ্গ সমতা এবং সমন্বিত অন্তর্ভুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে কাজ করছে। যার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ১৫টিতে অবদান রেখে চলেছে ব্র্যাক।

বৃহস্পতিবার (১২ই অক্টোবর) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘ব্র্যাক এসডিজি কন্ট্রিবিউশন ভলান্টারি রিভিউ ২০২৩’ শীর্ষক রিপোর্টের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।  

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।

তিনি বলেন, বৈষম্য বেড়েছে, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। এটা নিয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যা আছে। তবে পল্লীর দরিদ্র মানুষ চায়- বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, স্যানেটারি ল্যাট্রিন, স্বাস্থ্যসেবা, নিজের বাড়ি সংলগ্ন কাঁচা রাস্তাটি উপজেলার সড়কের সঙ্গে সংযোগ বা বিভিন্ন ধরনের ভাতা। পল্লীর এসব দরিদ্র মানুষের চাহিদা পূরণে আমরা কাজ করছি। তারা অধিকারের কথাটি ওভাবে বোঝে না।

মন্ত্রী বলেন, ব্র্যাক ২০ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য মুক্ত করেছে, যা সত্যি সত্যিই প্রশংসাযোগ্য। কিন্তু এরপরও আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতে সরাসরি ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। উন্নয়ন কৌশলেও পরিবর্তন প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আখতার হোসেন বলেন, এসডিজিকে (বাংলাদেশ সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল) জেলা-উপজেলা পর্যায়ে নিয়ে যেতে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। ব্র্যাক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বেসরকারি সংস্থাগুলোর একটি, যারা সরকারি কৌশলপত্রে উল্লেখ করা জাতীয় অগ্রাধিকার লক্ষ্যমাত্রার আলোকে দুর্গম অঞ্চলে স্বাস্থ্য, লিঙ্গ সমতা, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করছে। আমরা সব বেসরকারি সংস্থার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন এসডিজিতে তাদের অবদানের বিবরণ প্রকাশ করে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ব্র্যাকের চেয়ারপার্সন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, এসডিজি-১৬-তে মূলত ন্যায়বিচার নিয়ে কথা বলা হয়েছে এবং এটার চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে, একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা। বাংলাদেশকে অনেকগুলো উদ্বেগ ও বাস্তবতা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তাই আমাদের অবশ্যই অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে। বেসরকারি সংস্থাগুলো অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কাজ করতে পারে না। করোনা ভাইরাস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে যে আমাদের সবার একই রকম অস্তিত্বের সংকট রয়েছে। তাই বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হিসেবে আমাদের উচিত সরকার এবং অন্য উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে আরও বেশি অংশীদারত্ব গড়ে তোলা, যেখানে আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য থাকবে সাধারণ মানুষের কল্যাণ।

ব্র্যাকের ঊর্ধ্বতন পরিচালক কেএএম মোরশেদের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেঞ্জ প্রোগ্রামের হেড এস এম মনজুর রশীদ। অনুষ্ঠানে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, দাতা সংস্থা, বেসরকারি খাত, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা, সুশীল সমাজ, একাডেমিয়া ও গবেষণা সংস্থার প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২৩
জেডএ/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।