ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দুর্গাপূজা: মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু দেবীপক্ষ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২৩
দুর্গাপূজা: মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু দেবীপক্ষ

নারায়ণগঞ্জ: বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার পুণ্যলগ্ন শুভ মহালয়া। এদিন থেকেই শুরু হয় দেবীপক্ষের।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) এ উপলক্ষে দিনের শুরুতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শ্রীশ্রী চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার মর্ত্যলোকে আগমনের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। শারদীয় দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো এই মহালয়া।  

সৌর আশ্বিনের কৃষ্ণপক্ষের নাম ‘মহালয়া’। ‘মহালয়া’ কথাটি এসেছে মহালয় থেকে। মহালয়ের অর্থ পরমাত্মা। বৃহৎ আলয়। সৌর আশ্বিনের কৃষ্ণপক্ষের নাম মহালয়। দুর্গোৎসবের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পর্বের একটি মহালয়া। অন্য দুটি হচ্ছে বোধন ও সন্ধিপূজা।

আগামী ২০ অক্টোবর ষষ্ঠীতে দেবী দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে পাঁচদিনের শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। ২১ অক্টোবর সপ্তমী, ২২ অক্টোবর মহাষ্টমী ও কুমারী পূজা, ২৩ অক্টোবর মহানবমী এবং ২৪ অক্টোবর বিজয় দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন ও বিজয়া শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এই বর্ণিল উৎসব।

ভোরে দেওভোগ মন্দিরসহ নারায়ণগঞ্জের মন্দিরগুলোতে প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে মহালয়া শুরু হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভক্তরা উলু দিয়ে চণ্ডীপাঠ ও বিশেষ পূজা-অর্চনা ও সাংস্কৃতিক নৃত্য অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে এই মহালয়া পালন করেন। ভোরে মহালয়ার দেখে শত শত ভক্তরা এসে মন্দিরে ভিড় জমায়। এসময় দেবী দুর্গার অসুর বধ নাচ ও গানের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে ফুটিয়ে তোলা হয়।

সকালে শহরের বেশ কয়েকটি পূজা মণ্ডপ ঘুরে পূজার ব্যাপক প্রস্তুতি দেখা গেছে। দেবীকে স্বাগত জানাতে সবখানেই এখন সাজ-সাজ আবহ। মণ্ডপে মণ্ডপে মাটি আর খড়ের গন্ধ মিলেমিশে একাকার। নিরাভরণ দুর্গা প্রতিমার দিকে দৃষ্টি ফেললে মনে হচ্ছে শিল্পীর হাতের যাদুতে মহালয়ার আগেই প্রাণ পেয়েছে দেবী দুর্গা।

নারায়ণগঞ্জের শহরের টানবাজার, সাহাপাড়া, মিনাবাজার, ডালপট্টি, নিতাইগঞ্জ, আমলাপাড়া, গলাচিপা, উকিলপাড়া, চাষাঢ়া রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম, নন্দীপাড়া, পালপাড়া, নতুন পালপাড়া, দেওভোগ রাজা লক্ষ্মী নারায়ণ জিউর আখড়া, দেওভোগ দুর্গা মন্দিরসহ শহরের বিভিন্ন এলাকার ছোট বড় আকারের পূজা হয়। এসব পূজা দেখতে ষষ্ঠী থেকে দশমীর ভোর পর্যন্ত ভক্ত-দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই থাকে।

নারায়ণগঞ্জে শিল্পী সুমন পাল বলেন, প্রতিমার মাটির কাজ শেষ। এখন সাদা রঙ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে বিভিন্ন রঙে মায়ের প্রতিমা সাজিয়ে তোলা হবে। এখনও আরও দিন বাকি থাকায় ধীরে স্বস্তিতেই কাজ চলছে। তিনিসহ ৬ জন মিলে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কাজ করছেন। মহালয়ার পর থেকেই গভীর রাত পর্যন্ত কাজ চলবে। আশা করছেন পঞ্চমীতেই প্রতিমাগুলো মণ্ডপে পৌঁছে দেওয়া হবে।

মণ্ডপের সাজসজ্জার কমার্শিয়াল আর্টিস্ট টিংকু কুমার দে জানান, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যকে ঠিক রেখে সনাতন ধর্মীয় সংস্কৃতির আধলেই মণ্ডপগুলো সাজানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন মণ্ডপের অনেক কাজ শেষ। বিশেষ করে ককশিটের কাজ শেষ। এখন ফ্রেমসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ চলমান রয়েছে। পাশাপাশি রঙের কাজ শুরু হবে। পঞ্চমীর মধ্যেই মণ্ডপের কাজ শেষ হয়ে যাবে।

বলদেব জিউর আখড়া শিব মন্দিরের সভাপতি জয় কে রায় চৌধুরী বাপ্পী বলেন, পূজার প্রস্তুতি অনেক ভালো। ভিন্ন আঙ্গিকে আয়োজনের চেষ্টা করা হচ্ছে, সাজানো হচ্ছে। দশমীতে সিঁধুর দানসহ প্রতিদিন পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া সব কিছুই থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২৩
এমআরপি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।