ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় ‌‘হামুন’র তাণ্ডবে কক্সবাজারে ৩ জনের মৃত্যু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২৩
ঘূর্ণিঝড় ‌‘হামুন’র তাণ্ডবে কক্সবাজারে ৩ জনের মৃত্যু

কক্সবাজার: ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে কক্সবাজারে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাতে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ এ তথ্য জানিয়েছেন।



তিনি জানান, এখন পর্যন্ত কক্সবাজারে তিনজন মারা গেছে। নিহতরা হলেন, কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকায় আবদুল খালেক (৪০), চকরিয়ার বদরখালীতে আসকর আলী (৫০) ও মহেশখালী ইউনিয়নের কবরস্থান এলাকায় হারাধন দে (৪৫)। ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’র প্রভাবে ঝোড়ো হাওয়ায় দেয়াল ও গাছ চাপা পড়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

কক্সবাজার পৌরমেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী জানান, ঝড়ে রাতে পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের পাহাড়তলী এলাকায় আধা পাকা ঘরের দেয়াল চাপা পড়ে আবদুল খালেক নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাহফুজুল হক বলেন, মহেশখালী ইউনিয়নে রাতে ঘরের সামনের গাছ চাপা পড়ে হারাধন দে (৪৫) নামের আরেকজন মারা গেছেন। তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। এছাড়া গাছ চাপায় আরও ছয়জন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বাতাসের কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কে গাছ ভেঙে পড়েছে। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

কক্সবাজার শহরের বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. সাইফ উদ্দিন জানান, রাত পৌনে আটটার দিকে বাংলাবাজার ও খরুলিয়া এলাকায় সড়কের ওপর বড় বড় দুটি গাছ ভেঙে পড়লে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুই দিক থেকে আসা শত শত দূরপাল্লার বাস কয়েক ঘণ্টা ধরে আটকা পড়ে। এতে দূর-দূরান্ত থেকে আসা যাত্রী ও পর্যটকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। রাত প্রায় সাড়ে ১০টার দিকে পুনরায় যান চলাচল শুরু হয়।

কক্সবাজার শহরের দরিয়ানগর এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যা সাতটার দিকে পর পর তীব্র বেগে বাতাস শুরু হয়। বাতাসের তাণ্ডব চলে প্রায় দুই ঘণ্টা। এতে ওই এলাকার কয়েকশ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মেরিন ড্রাইভ সড়কে গাছ পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। কলাতলী-টেকনাফ পর্যন্ত শত শত গাছ ভেঙে সড়কের ওপর পড়েছে।

তিনি বলেন, বাতাস যে গতি তা গত ১০ বছরেও দেখিনি। গত বছর ২৪ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আঘাত হেনেছিল তখন জলোচ্ছ্বাস হলেও বাতাসের তীব্রতা এবারের মতো ছিল না।

কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ জানান, বিভিন্ন উপজেলা থেকে ক্ষয়ক্ষতির খবর আসছে। বিশেষ করে উপকূলীয় উপজেলা মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়ায় ক্ষয়ক্ষতির বেশি আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ শেষে বিস্তারিত জানা যাবে। ইতোমধ্যে দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রাথমিকভাবে নয়টি উপজেলার জন্য ৫০ হাজার টাকা এবং ১৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে লাল পতাকা উঁচিয়ে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পর্যটকদের সৈকতে না নামতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের সতর্ক করতে বিচকর্মীরা সেখানে মাইকিং করছেন।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে নানা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান, কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব মোকাবিলায় ক্যাম্পের ভেতরে সিআইসি কার্যালয়, পাকা স্থাপনাগুলো প্রস্তুত রাখা হয়। যেন পরিস্থিতি খারাপ হলেই চলে আসতে পারে।

তবে রোহিঙ্গা শিবিরে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানান রোহিঙ্গা নেতারা।

আরও পড়ুন>>>উপকূলে আছড়ে পড়ছে ‘হামুন’, পুরোপুরি অতিক্রম করবে ১০ ঘণ্টায়

বাংলাদেশ সময়: ০০১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২৩/আপডেট: ০২০১ ঘণ্টা
এসবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।