ঢাকা: কোনো প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকের মোট সংখ্যা তিন হাজার পর্যন্ত হলে এবং সেখানে ট্রেড ইউনিয়ন করতে হলে ২০ শতাংশ শ্রমিকের সম্মতি আর শ্রমিক সংখ্যা তিন হাজারের বেশি হলে শতকরা ১৫ ভাগের সম্মতির বিধান রেখে বাংলাদেশ শ্রম আইনের সংশোধনী হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি বিল উপস্থাপন করা হয়েছে সংসদে।
রোববার (২৯ অক্টোবর) জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) বিল–২০২৩ নামে বিলটি উপস্থাপন করা হয়েছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ানের পক্ষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি সংসদে উপস্থাপন করলে সেটি পরীক্ষা করে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
এ সংক্রান্ত বিদ্যমান আইনে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে ২০ শতাংশ শ্রমিকের সইযুক্ত বা তাদের সমর্থনসহ আবেদন না করলে ট্রেড ইউনিয়ন করা যায় না। নতুন বিলে সেটিকে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিলে বলা হয়েছে, কোনো প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত শ্রমিকদের মোট সংখ্যা তিন হাজার পর্যন্ত হলে শতকরা ২০ ভাগ এবং তিন হাজারের বেশি হলে শতকরা ১৫ ভাগ ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য না হলে তা নিবন্ধনের অধিকারী হবে না।
একই মালিকের অধীন একাধিক প্রতিষ্ঠান যদি একই শিল্প পরিচালনার উদ্দেশ্যে একে অপরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ও সম্পর্কযুক্ত হয়, তাহলে তা একটি প্রতিষ্ঠান বলেই গণ্য হবে।
এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানপুঞ্জে ট্রেড ইউনিয়ন করার ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানপুঞ্জ বলতে কোনো নির্ধারিত এলাকায় একই প্রকারের কোনো নির্ধারিত শিল্পে নিয়োজিত এবং অনধিক ২০ জন শ্রমিক নিযুক্ত আছেন- এ ধরনের সব প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে৷
বিদ্যমান আইনে বলা আছে, কোনো প্রতিষ্ঠানপুঞ্জে গঠিত কোনো ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রি করা যাবে, যদি ওই প্রতিষ্ঠানপুঞ্জের অন্তর্ভুক্ত সব প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত সব শ্রমিকের মোট সংখ্যার অন্যূন ৩০ শতাংশ ট্রেড ইইনিয়নের সদস্য হয়৷ প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে ২০ শতাংশ শ্রমিক সদস্য হলে ট্রেড ইউনিয়নের অনুমোদন মিলবে।
এ বিলে নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৮ দিন বাড়িয়ে ১২০ দিন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান ১৬ সপ্তাহের স্থলে ১২০দিন প্রস্তাব করা হয়। বিলে বলা হয়েছে, কোনো মালিক তার প্রতিষ্ঠানে সজ্ঞানে কোনো নারীকে তার সন্তান প্রসবের অব্যবহিত পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে কোনো কাজ করাতে পারবেন না বা কোনো নারী ওই সময়ের মধ্যে কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারবেন না।
এ ছাড়া প্রস্তাবিত বিলে একটি নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে, সংবিধানের ১০৩ অনুচ্ছেদের বিধানাবলি হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষেত্রে যেভাবে প্রযোজ্য হয়, শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে ক্ষেত্রেও সেভাবে প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হবে সরাসরি আপিল বিভাগে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২৩
এসকে/আরএইচ