ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কালশীতে বাসে আগুন, মাথাপিছু চুক্তি ১০ হাজার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২৩
কালশীতে বাসে আগুন, মাথাপিছু চুক্তি ১০ হাজার

ঢাকা: গত ১৮ নভেম্বর রাজধানীর মিরপুরের কালশী এলাকায় বসুমতি পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সরাসরি জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এরা হলেন আল মোহাম্মদ চাঁন (২৭), মো. সাগর (২৫), মো. আল আমিন ওরফে রুবেল (২৯) ও মো. খোরশেদ আলম (৩৪)।

র‍্যাব জানায়, বাসে আগুন দিতে গ্রেপ্তার চাঁন প্রত্যেকের জন্য ১০ হাজার টাকা করে পেলেও তিনি গ্রেপ্তার সাগর ও আল আমিনকে সাত হাজার টাকা করে দেন। এছাড়া দলীয় পদ-পদবির আশায় বাসটিতে আগুন দেন তারা।

সোমবার রাতে র‌্যাব-৪ এর একটি দল রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।  

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাহিনীর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।  

তিনি বলেন, গ্রেপ্তাররা বিরোধী একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী। তাদের দলের নেতাদের নির্দেশনায় গ্রেপ্তার আল মোহাম্মদ চাঁন মিরপুর ও পল্লবীর আশপাশের এলাকায় বাসে অগ্নিসংযোগ করার পরিকল্পনা করেন।

পরে গত ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার চাঁন, তার সহযোগী সাগর ও আল আমিন ওরফে রুবেল মিরপুর-১১, তালতলা নাভানা, কালশী রোড ও সিরামিক রোড এলাকায় সুবিধাজনক স্থানে সুবিধা মতো সময়ে যানবাহনে আগুন দেওয়ার জন্য রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করেন।

কমান্ডার মঈন বলেন, চাঁন বাসে আগুন দেওয়ার জন্য তার বন্ধুর মোটরসাইকেল থেকে ২৫০ এমএল পরিমাণ পেট্রোল বের করে টাইগার এনার্জি ড্রিংকের বোতলে ভরে ওইদিন সন্ধ্যায় আল আমিনের কাছে দেন। পরে গ্রেপ্তাররা একই দিনে আবার রাত ১১টার দিকে বাসে আগুন দেওয়ার জন্য কালশী সড়ক পর্যবেক্ষণ করেন।

তিনি বলেন, এ সময় কালশী সড়কে মসজিদের পাশে পার্ক করা বসুমতি পরিবহনের একটি বাস সুবিধাজনক হওয়ায় গ্রেপ্তার চাঁনের নির্দেশে সাগর ও আল আমিন বাসের কাছে যান। আল আমিন বাসের মাঝের জানালা খুলে পেট্রোল ঢেলে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে সঙ্গে সঙ্গে সাগরকে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার সময় চাঁন রাস্তার আইল্যান্ডের ওপরে দাঁড়িয়ে নির্দেশনা দেন ও পর্যবেক্ষণ করেন। এ ঘটনায় অন্য কেউ ছবি তুলে ও ভিডিও ধারণ করে স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের কাছে পাঠিয়ে যেন কৃতিত্ব নিতে না পারে, সেজন্য গ্রেপ্তার চাঁন বাসে আগুন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই খোরশেদকে ঘটনাস্থল থেকে ভিডিও ধারণ করে তাৎক্ষণিক তাকে পাঠাতে বলেন।  

এরপর গ্রেপ্তার চাঁন ধারণ করা ভিডিওটি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে পাঠান। এ কাজের জন্য গ্রেপ্তার চাঁন জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে পেলেও তিনি গ্রেপ্তার সাগর ও আল আমিনকে সাত হাজার টাকা করে দিয়েছেন।  

মূলত দলের কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো ও দলের প্রতি নিজেদের আস্থার প্রতিদান দিতে তারা এসব নাশকতা ও সহিংসতার ভিডিও ধারণ করে শীর্ষস্থানীয় নেতাদের কাছে পাঠান।  

কমান্ডার মঈন বলেন, এছাড়াও নাশকতার এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার করে তাদের সমমনা অন্যান্য অনুসারীদের নাশকতা সৃষ্টিতে প্ররোচিত করা হয়। পরে স্থানীয় তারা গ্রেপ্তার চাঁনকে আবারও ২১ নভেম্বর সন্ধ্যায় একইভাবে সুবিধাজনক স্থানে গাড়ি পোড়ানোর জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

গ্রেপ্তাররা গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টনে বিরোধী একটি দলের মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। পরে পল্টন এলাকাসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহন, ব্যক্তিগত পরিবহন, সরকারি পরিবহনসহ বিভিন্ন যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নাশকতা ও সহিংসতার সঙ্গেও তারা জড়িত ছিলেন।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২৩
এমএমআই/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।