নোয়াখালী: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-২ (সেনবাগ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর ভোট নিশ্চিত করতে ৪৯২ জন সুবিধাভোগীর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড জব্দ করার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার অম্বরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন দুলু কার্ডগুলো ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে নিয়ে নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন দুলু এর সত্যতা স্বীকার করেন।
এর আগে, এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে আসনটির স্বতন্ত্র (আ.লীগ) প্রার্থী আতাউর রহমান ভুঁইয়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনে সেনবাগের ৯টি ইউনিয়ন ছাড়াও পার্শ্ববর্তী সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা, অম্বরনগর, বারোগাঁও ও নাটেশ্বর ইউনিয়ন এ আসনটির অর্ন্তভুক্ত।
আসনটিতে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোরশেদ আলম। এছাড়াও আসনটিতে স্বতন্ত্রসহ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আরও সাতজন প্রার্থী।
নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর ভোট নিশ্চিত করতে আসনটির সোনাইমুড়ী উপজেলা অম্বরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন দুলু তার ৯টি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের (মেম্বার) মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৪৯২টি কার্ড কালেকশন করে নিজেদের সংরক্ষণে রেখেছেন।
কার্ডের সুবিধাভোগী হারুন অর রশিদ, আবদুল করিম ও আবুল হাশেমসহ কয়েকজন জানান, মেম্বাররা এসে আমাদের কাছে খাদ্যের কার্ড চেয়েছিলেন। বললেন চেয়ারম্যান নিতে বলছেন, চাল আসা পর্যন্ত কার্ড চেয়ারম্যানের কাছে জমা থাকবে। এছাড়া আমাদের আর কিছু বলেননি মেম্বাররা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন দুলু বলেন, আমি নিজেই স্ব-স্ব মেম্বারদের মাধ্যমে ৪৯২টি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড জমা নিয়েছি। এই কার্ডধারীরা শেখ হাসিনার দেওয়া ১০ টাকা মূল্যে ৩০ কেজি করে চাল পেয়ে থাকেন। গত সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে তারা চাল পেয়েছিলেন। আগামী এপ্রিল এবং মে মাসে আবারও পাবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, ‘যেহেতু তারা সরকারের সুবিধা গ্রহণ করেন, সেহেতু তাদের সরকারের মার্কা নৌকায় ভোট দিতে হবে। নৌকার প্রার্থীকে জয়ী করতে আমরা এমপি সাহেবের (মোরশেদ আলম) সঙ্গে মিটিং করেছি। প্রতিটি ওয়ার্ড ভিত্তিক আমরা কার্ড সুবিধা পাওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করবো এবং যারা নৌকার প্রার্থীকে ভোট দেবেন বলে কথা দেবেন আমরা তাদের কার্ড ফিরিয়ে দেব।
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থীর এমন কোনো অভিযোগ এখনও আমি দেখিনি। তবে একজন চেয়ারম্যান এভাবে সরকারি সুবিধাভোগী কারো কার্ড জব্দ করতে পারেন না। বিষয়টি সম্পর্কে খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩
আরএ