ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রাজশাহীতে তিন উপজেলার চার কেন্দ্রে আগুন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২৪
রাজশাহীতে তিন উপজেলার চার কেন্দ্রে আগুন

রাজশাহী: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা শেষ না হতেই রাজশাহীতে ভোটকেন্দ্রিক সহিংসতা দেখা গেছে। জেলার বিভিন্ন সংসদীয় আসনের এলাকা থেকে অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ ও আইডি পেতে রাখার খবর মিলছে।

তবে এসব ঘটনায় এখনও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দিনগত গভীর রাতে রাজশাহীর তিন উপজেলায় চার ভোটকেন্দ্রে অগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। একটি কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। পরে সেখান থেকে আরও দুইটি তাজা ককটেল  জব্দ করেছে পুলিশ। ভোটের আগে জনমনে আতঙ্ক ছড়াতে এমন অগ্নিসন্ত্রাস হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দুইটি নির্বাচনী কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এগুলো হচ্ছে- ঝিনা ও জুতনশি। পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়ার এসব ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া না গেলেও স্কুলের আসবাবপত্র পুড়ে গেছে।

এর মধ্যে বাঘা উপজেলার আড়ানী ইউনিয়নের ঝিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের ১৫টি চেয়ার, টেবিল, আলমারিসহ বেশ কিছু আসবাবপত্র পুড়ে গেছে।

বাঘা উপজেলার ঝিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুরাদ আলী বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে আগুন লাগে। অফিসের পেছনের জানালার ফাঁক দিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা। সেখানে পেট্রোলও পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করা হবে বলেও জানান তিনি।

রাজশাহীর বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, উপজেলার জুতনশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের পরিত্যক্ত ভবনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এটি মূল ভোটকেন্দ্রের বাইরের অংশ। এই আগুনের ফলে ভোটকেন্দ্রের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এছাড়া উপজেলার আড়ানী পৌরসভার ঝিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রধান শিক্ষকের অফিসে আগুন লাগে। এতে কিছু বই ও আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। যদিও প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- বৈদু্তিক শর্ট সার্কিটের কারণে স্কুলটিতে আগুন লাগে। তাই তদন্তের পর নিশ্চিত করে বলা যাবে।

অন্যদিকে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গণিপুর ইউনিয়নের আক্কেলপুর উচ্চবিদ্যালয় ও মোহনপুর উপজেলার মতিহার উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রেও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

এছাড়া বিকট শব্দে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার পর বাগমারা উপজেলার ভোটকেন্দ্র থেকে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সকালে আরও দুইটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ।

রাজশাহীর বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বাংলানিউজকে জানান, উপজেলার আক্কেলপুর উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা রাতেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এই ভোটকেন্দ্রের সামনে দুটি অবিস্ফোরিত তাজা ককটেল পাওয়া যায়। পরে সেগুলো উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করা হয়। তবে এ ঘটনায় কাউকে এখনও শনাক্ত বা আটক করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে ভোটের আগে এসব বিচ্ছিন্ন সহিংসতা সৃষ্টির বিষয়ে রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছে। এসব ঘটনা ভোটের ওপরে কোনো প্রভাব ফেলবে না। এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। গত রাতে স্কুলগুলোতে কীভাবে আগুন লেগেছে তার তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তের পর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহীর তানোর উপজেলার সদর পৌরসভা এলাকার গোল্লাপাড়া মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রব্বানীর (কাঁচি প্রতীক) জনসভা ছিল। নির্বাচনী জনসভা চলাকালীন সময় একটি দোকানের পাশে একটি বোতলে আইইডি (উন্নত বিস্ফোরক ডিভাইস) সদৃশ সার্কিট পাওয়া যায়। পরে র‌্যাব-৫ এর উপ-অধিনায়ক মেজর হাসান মাহমুদের নেতৃত্বে একটি অপারেশনাল দল দ্রুত ঘটনা স্থানে পৌঁছে। দ্রুততার সঙ্গে তারা সার্কিট লাগানো ওই বস্তুটিকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে গোল্লাপাড়া বাজারের কাছে থাকা ফাঁকা মাঠে নিয়ে যায় এবং রাত সাড়ে ৮টার দিকে সেটি নিষ্ক্রিয় করে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫১ ঘণ্টা, জানুয়া‌রি ০৫, ২০২৪
এসএস/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।