ঢাকা, শুক্রবার, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘আমার বাচ্চাটা মারা গেছে, আমারে বের করতে হইবো না’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২৪
‘আমার বাচ্চাটা মারা গেছে, আমারে বের করতে হইবো না’

ঢাকা: রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের পুড়তে থাকা একটি বগিতে দেখা যায়, জানালা দিয়ে দুই হাত আর মাথা বাইরে বের করে আছেন এক ব্যক্তি। আর জানালাটা অর্ধেক খোলা।

ভেতরের আগুনের লেলিহান পাশের সব জানালা দিয়েই বাইরের দিকে বেরিয়ে আসছে।

আগুনে সামান্য দগ্ধ হয়ে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছেন ট্রেনটির যাত্রী নাফিজ আলম (২২) নামে এক যুবক। শুক্রবার (০৫ জানুয়ারি) দিনগত রাতে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আগুন লাগার পর আমার সিটের পাশের জানলা দিয়ে বের হতে পারিনি। তখন পেছনের সিটের জানালা দিয়ে লাফ দেই। বাইরে বের হওয়ার পর দেখি পাশের জানালায় অর্ধেক শরীর বের হওয়া ওই ব্যক্তি। তখন তার হাত ধরে টেনে বাইরে বের করা চেষ্টা করি। ততক্ষণে তার শরীরের নিচেরদিকে আগুন ধরে গেছে। কিন্তু তিনি বারবার বলছিলেন, ‘আমার বাচ্চাটা মারা গেছে। আমি আর বাঁচবো না। আমারে বের করতে হইবো না। ’ এদিকে আগুন দ্রুতই বাড়তে থাকায় তাকে আর বের করা সম্ভব হয়নি।

ফরিদপুরের ভাঙা থানার বাকপুড়া গ্রামের মাসুদ আলমের ছেলে নাফিজ আলম। থাকেন মিরপুরে মনিপুর এলাকায়। ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা শেষ করে বর্তমানে ধানমন্ডিতে ‘পিপল এন্টেক’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে গ্রাফিক্স ডিজাইন প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তিনি।

ঢাকা রেলওয়ে থানা পুলিশ বলছে, উদ্ধার হওয়া চারটি মরদেহের মধ্যে একজন পুরুষ বলে বুঝা যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভয়াবহ সেই ভিডিও ফুটেজে দেখতে পাওয়া জানালার পাশে আগুনে পুড়তে থাকা ব্যক্তিরই মরদেহ এটি।

শুক্রবার রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে মিডিয়া কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম বলেন, রাত ৯টা ৫ মিনিটে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ধাপে ধাপে বেশ কিছু ইউনিট পাঠানো হয়। বাংলানিউজের হাতে আসা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রেনের একটি জ্বলন্ত বগির জানালায় একজন নিথর হয়ে পড়ে আছেন।

ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) আনোয়ার হোসেন বলেন, কমলাপুর রেলস্টেশনে প্রবেশের সময় বেনাপোল এক্সপ্রেসের ট্রেনটিতে আগুনের ঘটনা ঘটে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২৪
এজেডএস/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।