ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

আগুনে নিহত কলেজছাত্র সজীবের পরিবারের পাশে জেলা প্রশাসন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৪
আগুনে নিহত কলেজছাত্র সজীবের পরিবারের পাশে জেলা প্রশাসন

বরিশাল: বরিশালে আগুনে পুড়ে নিহত বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজছাত্র সজীব জমাদ্দারের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত সজিবের বাবা আবুল কালাম জমাদ্দারকে ২৫ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম।

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠি ইউনিয়নের নাঙ্গলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও নিহত সজিবের বাবা আবুল কালাম জমাদ্দার জানান, অভাব-অনটনের পরিবারে বেড়ে ওঠা সজিবের ইচ্ছে ছিল পড়াশোনা করে বড় হয়ে একটা ভালো চাকুরি করার কিন্তু।

কিন্তু সেই স্বপ্ন আগুনে পুড়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, স্ত্রী, দুই কন্যা আর একমাত্র ছেলে সজীব জমাদ্দারকে নিয়ে আমার সংসার ছিল। কখনো দিনমজুর, কখনো ক্ষুদ্র ব্যবসা করে সংসার চালাই। ছেলের পড়াশোনার খরচ মেটাতে পারব না বিধায় সে নিজেই বরিশাল শহরে চাকরি নিয়ে বেসরকারি একটি পলিটেকনিক কলেজে পড়তো।


জানা গেছে, বরিশাল নগরের জিয়া সড়কের হাবিব মটরসে মাসিক ৮ হাজার টাকা বেতনে চাকরি নেন। দিনে কলেজে ক্লাস শেষে বিকেলে দোকানে ফিরতেন। সেখানেই রাতে থাকতেন এবং জীবিকা নির্বাহের কাজটিও করতেন।

সজীবের বন্ধু সৌরভ মিস্ত্রি জানান, মেধাবী হলেও নানা প্রতিকূলতায় এসএসসির ফলাফল খুব ভালো করতে পারেনি সজীব।  তবে পড়াশোনা করে অনেক বড় হওয়ার তাগিদ ছিল ওর মধ্যে। বিভিন্ন চাকরির খোঁজখবরও রাখতো।

এদিকে কলেজের প্রতিটি সেমিস্টারে সজীব ভালো ফলাফল করেছে জানিয়ে ইনফ্রা পলিটেকনিট ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের প্রধান নূরুল হুদা বলেন, সজীব খুব বিনয়ী আর লেখপড়ায় মনোযোগী ছিল। পরিবারের অসচ্ছলতার কথা আমরাও জানতাম। ওর সংগ্রাম করে লেখাপড়া করার উদাহরণ অন্যদের দিতাম। সজীবকে নিয়ে আমাদের প্রত্যাশাও ছিল অনেক। কিন্তু সব কিছু এভাবে থেমে যাবে তা ভাবিনি। এ দুঃখ ভাষায় প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

কলসকাঠি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফয়সাল ওয়াহিদ বলেন, আমার গ্রামেরই ছেলে সজীব। ছোটবেলা থেকে ওরা অভাব অনটনের সঙ্গে লড়াই করে বড় হয়েছে। তবে সজীবের সুনাম ছিল এলাকায়। আমাদের প্রত্যাশা ছিল সজীব তার আত্মবিশ্বাস দিয়ে একটা কিছু করে দেখাবে। সেভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিল লেখাপড়া করে। কিন্তু একটি অগ্নিকাণ্ড সবার আশার সমাপ্তি ঘটালো।

তিনি জানান, মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত শেষে মরদহ বুঝে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে দাফন সম্পন্ন করেছি। ওর পরিবারকে সর্বাত্মক সহায়তা করছি। উপজেলা প্রশাসন থেকেও সহায়তা করছে।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে বরিশাল নগরের জিয়া সড়ক এলাকায় চারটি দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই সময় দোকানের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা কলেজছাত্র সজীব জমাদ্দারের মৃত্যু হয়। তিনি ইনফ্রা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের পঞ্চম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৪
এমএস/জেএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।