ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ডেইলি স্টার পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসা থেকে নিচে পড়ে গৃহকর্মী প্রীতি ওরাংয়ের (১৫) মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে অগ্রগতি হচ্ছে। এরই মধ্যে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারকে পৃথক কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, গৃহকর্মী প্রীতির ময়নাতদন্তের রিপোর্টে যদি হত্যার আলামত পাওয়া যায়, তাহলে চলমান মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হবে।
ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারকে গৃহকর্মী প্রীতির মৃত্যুর দিনই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়ে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। ডেইলি স্টার পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (কেরানীগঞ্জ) বন্দি আছেন এবং তার স্ত্রী আছেন কাশিমপুর কারাগারে।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে এ বিষয়ে কথা হয় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) নাজমুল হাসানের সঙ্গে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন, গৃহকর্মী প্রীতির মৃত্যুর ঘটনায় পরিবার থেকে একটি মামলা করা হয়েছে। পেনাল কোড ৩০৪ এর ক ধারায় এই মামলাটি হয়েছে।
তিনি বলেন, ঘটনার পরপরই দুর্ঘটনাস্থলসহ আশপাশের লোকজনের সঙ্গে পুলিশ কথা বলেছে। তদন্ত চলমান রয়েছে। তাছাড়া আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, আজকে পৃথক দুটি জেলগেটে গিয়ে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, মামলার অগ্রগতি হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে আদালতে পুলিশের প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেতে সাধারণত দেরি হয়, কারণ ময়নাতদন্তের সময় চিকিৎসকরা মৃতদেহ থেকে ভিসেরা স্যাম্পল সংগ্রহ করে সেটা ল্যাবে পাঠায়। সেই রিপোর্ট ময়নাতদন্ত চিকিৎসকের কাছে আসার পরে তারা একটি রিপোর্ট তৈরি করেন।
তিনি আরও বলেন, গৃহকর্মী প্রীতির কারও অবহেলার কারণে মৃত্যু হয়েছে কিনা সেসব বিষয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে যদি হত্যার আলামত পাওয়া যায়, তাহলে এই মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ জানান, ৭ ফেব্রুয়ারি ডেইলি স্টার পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদককে কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয় ও তার স্ত্রীকে নিয়ম অনুযায়ী কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।
কারাগার থেকে এক সূত্র জানায়, কারাগারে বন্দি ডেইলি স্টার পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তার পরিচিতজনরা।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের ২/৭ বাড়ির নিচতলা থেকে প্রীতিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যায় লোকজন। চিকিৎসক জানান, আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পরপরই তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় পুলিশও।
ঘটনার দিন মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পবিত্র মণ্ডল জানান, সব বিষয় তদন্ত করা হচ্ছে।
প্রীতি মৌলভীবাজার কমলগঞ্জ উপজেলার লুকেশ ওরাংয়ের সন্তান। তার এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না পরিবার। তারা তদন্তসাপেক্ষে এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪
এজেডএস/এমএম