ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

যৌতুক না পেয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার দ্বিতীয় বিয়ে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪
যৌতুক না পেয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার দ্বিতীয় বিয়ে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

নারায়ণগঞ্জ: সাতবছর পর আবারও ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি নজরুল ইসলাম নয়নের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট) জারি করেছেন।

সম্প্রতি তার স্ত্রী মাহফুজা আক্তার হ্যাপীর দায়ের করা যৌতুক মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ পরোয়ানা জারি করেন।

হ্যাপীর দাবি যৌতুক না দেওয়ায় দ্বিতীয় বিয়ে করার হুমকি দেন নজরুল ইসলাম নয়ন। এতে দাবিকৃত যৌতুক না দেওয়ায় সে দ্বিতীয় বিয়ে করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দুজনের ছবি প্রকাশ করেন।

এর আগে ২০১৭ সালে নজরুল ইসলাম নয়নের বিরুদ্ধে প্রথম যৌতুক মামলা দায়ের করেন হ্যাপী। পরে সে মামলায় উভয়ের আপস মীমাংসায় আদালত থেকে খালাস পান নজরুল। আর প্রথম মামলায় নজরুলের পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবী সাইদুর রহমান এখন হ্যাপীর পক্ষে দ্বিতীয় মামলা দায়ের করেছেন।

অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান জানান, ২০১৭ সালে যে শর্তে হ্যাপীর সঙ্গে নজরুল ইসলাম নয়নের আপস হয়েছিল সে শর্ত ভঙ্গ করে ফের যৌতুক দাবি করেছেন। এজন্য ন্যায় বিচারের স্বার্থে হ্যাপীর পক্ষে আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত হয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলা করেছি। একইদিন আদালত নজরুল ইসলাম নয়নের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

মাহফুজা আক্তার হ্যাপী বলেন, গত বিএনপি সরকার আমলে ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলা থেকে পালিয়ে এসে ফতুল্লায় আত্মগোপন করেন নজরুল ইসলাম নয়ন। ওই সময় পাশাপাশি বাড়িতে বসবাস করায় প্রেমের সম্পর্কে আমাদের বিয়ে হয়।

বিয়ের পর বলেছেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে আমাকে তার বাড়ি নিয়ে যাবেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে অনেক বছর হয়। এর মধ্যে আমাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। যার নাম রাখা হয়েছে নাবিলা আক্তার। তার বয়স তখন চার বছর ছিল।

তখন তাগিদ দিলে নয়ন বলতো সামনে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবো। নির্বাচনে জয়ী হয়ে আমাকে ও আমার মেয়েকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যাবে। পরে নির্বাচনের জয়ী হয়েও বাড়িতে তুলে নেয়নি। পরে মামলা করার পর আমাকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এতে উভয় পক্ষের আইনজীবী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে নজরুল ইসলাম বলেছে আমার কাছে আর কখনও যৌতুক চাইবে না। তার দেওয়া আশ্বাসে মামলা তুলে নেই। এরপর কয়েকবছর আমাদের সুখের সংসার ছিল। ২-৩ বছর ধরে আবার সেই আগের মতো নির্যাতন করছেন। সে জানে যৌতুক দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই তারপরও সে মোটা অঙ্কের টাকা যৌতুক দাবি করেন।

তিনি আরও বলেন, ২ ফেব্রুয়ারি নজরুল তার বড় ভাই মোবারককে সঙ্গে নিয়ে আমাদের ফতুল্লার বাসায় এসে হুমকি দিয়ে বলেন টাকা না দিলে দ্বিতীয় বিয়ে করবেন। তখন যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানাই। কিছুদিন পর ফেসবুকে দেখি শিশু সন্তানসহ দ্বিতীয় স্ত্রীর ছবি পোস্ট করেছে। বিষয়টি দেখে মানুসিকভাবে ভেঙে পড়ি। তারপর নজরুলের পক্ষের আইনজীবী সাইদুর রহমান স্যারকে জানাই। সে নজরুলের সঙ্গে কথা বলে কোনো সমাধান করতে পারেনি। এরপর তিনিই আমাকে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দিয়ে আদালতে নিয়ে আসেন।

হ্যাপী ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের দেলপাড়া গ্রামের মাইনদ্দিন মিয়াজীর মেয়ে। আর নজরুল ইসলাম নয়ন ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলার ভাবনী কোনা কাজী বাড়ির মৃত. আফতাব উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪
এমআরপি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।