ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নরসিংদীতে আ. লীগ সমর্থিত দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ২০

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৪
নরসিংদীতে আ. লীগ সমর্থিত দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ২০

নরসিংদী: আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নরসিংদীর দুর্গম চরাঞ্চল আলোকবালীতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের নয়জন গুলিবিদ্ধসহ ২০ জন আহত হয়েছেন।

এসময় ভাঙচুর করা হয়েছে ১৫ থেকে ২০টি বাড়িঘর। লুট করা হয়েছে গোয়ালের তিনটি গরু।  

বুধবার (১৩ মার্চ) ভোর ৫টার দিকে সদর উপজেলার চরাঞ্চল অলোকবালীতে এ ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহত তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে হামলা ও ভাঙচুর নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদ উল্লাহ ও ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু।

গুলিবিদ্ধ অলোকবালী ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু সমর্থকরা হলেন- মো. মনিরুজ্জামান, বজলু মিয়া, শীতল মিয়া, আল-মাহফুজ, আবদুর রহমান, খোকা মিয়া।

অপরদিকে গুলিবিদ্ধ অলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. আসাদ উল্লাহর সমর্থকরা হলো বাচ্চু মোল্লার ছেলে রমজান (২৫) আজিজ মোল্লার ছেলে মোজাম্মেল (১৮) মুকবুল মোল্লার ছেলে আরিফুল (১৯) ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমজাদ (২০) নামে একজন নরসিংদী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

জানা যায়, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে নরসিংদী সদর উপজেলার চরাঞ্চল আলোকবালী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা দেলোয়ার হোসেন দীপুর সঙ্গে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. আসাদ উল্লাহর দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। দ্বন্দ্বের জেরে একাধিকবার হামলা-মামলা-সংঘর্ষ ও একাধিক হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে। সম্প্রতি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. আসাদ উল্লাহ স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন। এ নিয়ে উভয় সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও বেড়ে যায়।  

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আসাদ উল্লাহর বেশ কয়েকজন সমর্থক এলাকা ছাড়া হয়। আজ বুধবার ভোর ৫টার দিকে অর্ধশতাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে গ্রামে ফিরে আসার চেষ্টা করেন। এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করতে গুলিবর্ষণ করেন। ওই সময় বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা দেলোয়ার হোসেন দীপুর সমর্থকরা বাধা দেন। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে উভয়পক্ষের নয়জন ছররা(ছিটা) গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত সহ ২০ জন কম-বেশি আহত হন। ওই সময় প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। হামলা চালিয়ে ফেরার পথে হামলাকারীরা ফরহাদ নামে এক গ্রামবাসীর তিনটি গরু লুট করেন। পরে আহতদের উদ্ধার করে সকালে ও দুপুরে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে সকালে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।  

হামলার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদ উল্লাহ ও ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু।

আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদ উল্লাহ বলেন, ভোর ৫টার দিকে চেয়ারম্যান সমর্থকরা অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়িসহ সমর্থকদের ওপর হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছেন। ওই সময় তারা আমাদের ২৫ থেকে ২০টি বাড়ি ভাঙচুর করেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে আলোকবালী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু বলেন, নির্বাচন ও গ্রামের মানুষের ওপর হামলা করার মামলাকে কেন্দ্র করে আসাদের বেশকিছু লোক গ্রাম ছাড়া। তারা আজকে ভোরে ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও অস্ত্রধারীদের নিয়ে গ্রামে আসেন। এসে তারা নির্বিচারে আমার সমর্থকদের ওপর গুলি চালিয়েছেন। এসময় ছয়জন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মাহামুদুল বাশার কমল জানিয়েছেন, আলোকবালীর ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ছয়জন ছিটা গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।  


নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে গুলিবিদ্ধ হওয়ার কোনো খবর পাইনি। এখন এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।