ঢাকা: সরকার, শিল্প ও শ্রম খাতের প্রতিনিধিরা ঢাকায় একটি জাতীয় সংলাপে মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান এবং শোভন কাজের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। একইসঙ্গে তারা বাংলাদেশের শ্রম খাত সংস্কারের অঙ্গীকার করেছেন।
রোববার (৩১ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা যৌথভাবে এ সংলাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল শ্রম খাতের অংশীজনদের একত্রিত করা এবং মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান এবং শোভন কাজের জন্য আহ্বান জানানো।
সংলাপে অংশীজনরা বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেন, যা ভবিষ্যতে শোভন কাজ এবং ব্যবসায়ে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করবে জাতীয় উন্নয়ন কৌশলের মাধ্যমে। এতে গঠনমূলক আলোচনা, জ্ঞানের বিস্তার এবং অংশীদারত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়। আলোচনায় যুক্ত হন সরকারি কর্মকর্তা, মালিক, শ্রমিক, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, উন্নয়ন অংশীদার ও গণমাধ্যমের কর্মকর্তারা।
প্রধান অতিথি হিসেবে, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী, তার আলোচনায় শ্রম সংস্কারের প্রতি জোর দেন। তিনি বলেন, শোভন কাজের প্রচার এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের অগ্রগতির জন্য আমরা বদ্ধপরিকর। একইসঙ্গে আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলব, যেখানে সব শ্রমিকের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে এবং তাদের অবদানের মূল্যায়ন হবে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন শ্রম-সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে বহুপক্ষীয় সংলাপের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, সরকারের বর্তমান মেয়াদে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শোভন কাজে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত নীতিমালা আমাদের জাতীয় উন্নয়ন কৌশলের সঙ্গে গভীরভাবে একীভূত, যার মধ্যে জিবি রোডম্যাপ (২০২১-২০২৬) এবং বাংলাদেশের শ্রম খাতের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০২১-২০২৬) অন্তর্ভুক্ত।
সংলাপে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, আমাদের যৌথ প্রচেষ্টা সঠিক ও কার্যকরী নীতিমালা তৈরি করছে। এর মূল লক্ষ্য আমাদের কর্মশক্তির জীবনযাত্রার উন্নতির পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে তাদের মৌলিক অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পৌটিআইনেন বলেন, সফল এলডিসি গ্রাজুয়েশনের জন্য প্রধান উন্নয়ন লক্ষ্য, যেমন- চাকরি সৃষ্টি, প্রমাণ-ভিত্তিক মজুরি নীতিমালা এবং পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের প্রতি বাংলাদেশের জোর দেওয়া দরকার। আইএলও এসব লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের জন্য একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অংশীদার হিসেবে কাজ করছে।
সংলাপে তিনটি প্যানেল আলোচনায় যুক্ত হন সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা, যেখানে গ্লোবাল এক্সেলারেটর ফর জবস, প্রমাণ-ভিত্তিক জাতীয় মজুরি নীতিমালা এবং পেশাগত নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। প্রতিটি প্যানেলে কর্মস্থলের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগের ওপর বিস্তারিত আলোচনা হয়। সরকার, মালিক, শ্রমিক, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, উন্নয়ন অংশীদাররা শোভন কাজ নিশ্চিত করা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার উৎসাহিত করার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করার প্রতি জোর দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০২ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৪
টিআর/আরএইচ