মাদারীপুর: পদ্মাসেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চলের মহাসড়কগুলোয় যানবাহন চলাচলে ব্যস্ততা বেড়েছে। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া দক্ষিণাঞ্চলের গাড়িগুলো মুহূর্তেই পদ্মা পার হয়ে আসায় মহাসড়কজুড়ে যানবাহনের চাপ লেগেই থাকে।
জানা গেছে, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে একাধিক কোনো লেন নেই। দেশের অন্য সব মহাসড়কের চেয়ে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কটি সরু। এই সড়কেই নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলছে ধীরগতির ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন, মাহিন্দ্রা গাড়িগুলো। অন্যদিকে, দূরপাল্লার পরিবহনগুলো দ্রুত গতির হয়ে থাকে। এতে করে বাড়ছে দুর্ঘটনা। সরু রাস্তা ও ধীরগতির অবৈধ যানবাহনের কারণে সৃষ্টি হচ্ছে দুর্ভোগও। ফলে ব্যস্ততম এই সড়কে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে যানবাহন।
মাদারীপুর জেলার কালকিনির ভুরঘাটা থেকে রাজৈরের টেকেরহাট পর্যন্ত অংশে এই মহাসড়কটি মাত্র ১৮ থেকে ২৪ ফুট প্রস্থ। এর মধ্যে অনেক জায়গায় মহাসড়কটির অবকাঠামো খুবই নড়বড়ে। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে যাত্রীদের।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পাশাপাশি প্রস্তাবিত ছয় লেন মহাসড়কের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও নকশা প্রণয়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হয়। কিন্তু পরামর্শক চূড়ান্ত নকশা জমা দিলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকেই ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা আগের চেয়ে চারগুণ বেড়েছে। তবে উন্নত হয়নি এর অবকাঠামো। এই মহাসড়কের কোনো কোনো জায়গায় দুইটি যানবাহন পাশাপাশি চলাচল করতেও সমস্যায় পড়তে হয়। ফলে এই মহাসড়কে দুর্ঘটনা লেগেই থাকে।
পরিবহন চালকেরা জানান, এই মহাসড়কটি খুবই ব্যস্ততম। অথচ সড়কটি সরু। গাড়ি চালাতে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। বিশেষ করে এই মহাসড়কে নছিমন, টমটম, অটোরিকশাসহ নানা ধরনের অবৈধ যানবাহন চলাচল করায় পরিবহন চালকদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। একদিকে সরু রাস্তা, অপরদিকে সব অবৈধ যানবাহন চলাচল করায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
মাদারীপুরের মস্তফাপুর হাইওয়ে পুলিশ পরিদর্শক মো. মারুফ রহমান বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধের জন্য কাজ করছি। বর্তমানে ঈদকে সামনে রেখে আমরা আরও বেশি সর্তক। এই সড়ক দিয়ে অবৈধ কোনো যানবাহন যেন চলাচল করতে না পারে, সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি।
মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হাসান বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হলে সড়ক প্রশস্থকরণের কাজ শুরু হবে। ইতোমধ্যে ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়েছে। সড়ক নির্মাণে কারা অর্থায়ন করবে সেই সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করছি অতিদ্রুত সড়কটি উন্নয়নের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২৪
এসআইএ