বগুড়া: ঘনিয়ে আসছে ঈদুল ফিতর। এ উৎসবকে সামনে রেখে বগুড়ায় বসে নেই ইমিটেশনের অলঙ্কার ব্যবসায়ীরা।
রোববার (৭ এপ্রিল) দুপুরে শহরের বিভিন্ন অভিজাত শপিংমল ঘুরে ইমিটেশন অলঙ্কার দোকানীদের বেচা-বিক্রির ব্যস্ততা চোখে পড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদ ঘনিয়ে আসায় ইমিটেশন জুয়েলারির ব্যবসা বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন মার্কেটে থাকা ইমিটেশনের দোকানে ভিড় করে নারীরা তাদের পছন্দের জুয়েলারি কিনে নিচ্ছেন। অলঙ্কার শপিংমলগুলোতে থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বাহারি ডিজাইনের ইমিটেশন অলঙ্কার।
এসব অলঙ্কারে ছোঁয়ায় ফুটে উঠে নারীর সৌন্দর্য ও আভিজাত্য। সোনা রঙের এসব অলঙ্কার ব্যাপক হারে ব্যবহার করছেন বর্তমান যুগের তরুণীরা। রকমারি ডিজাইন ও কারুকার্য খচিত অলঙ্কারগুলো নারী ক্রেতাদের দৃষ্টি কাড়ছে ভীষণভাবে। কেনাকাটার শেষ বেলায় এসে পোশাকের রঙের সঙ্গে মেচিং করে পছন্দের ইমিটেশন সামগ্রী কিনতে ব্যস্ত তরুণীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত, চীন, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়া, নেপাল, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের আকর্ষণীয় ইমিটেশন অলঙ্কার এবারের ঈদ সামনে রেখে কালেকশন করা হয়েছে। যেন এসব গয়না নিজেই সেজেসে নতুন সাজে।
এর মধ্যে ঝুমকো কানের দুল, নোলক, টিকলি, নূপুর, লহর মালা, ডায়মন্ড কাটিং চুড়ি, ব্রাইডাল সেট, নেকলেস, পায়েল, সিতা হার, বাজু, কোমরের বিছা, লকেট, রাখি, চুড়ি ইমিটেশনের অন্যতম অলঙ্কার। রয়েছে গলা থেকে ডিম্বাকৃতির লম্বা সিতাহার। সাতনরী হারও মিলছে এবারের কালেকশনে।
শহরের নিউ মার্কেট থেকে কানের দুল কিনেছেন সানজিদা আকতার। তিনি বাংলানিউজকে জানান, একটা কানের দুল কিনেছেন ২৫০ টাকায়। দুলটি তার খুব পছন্দ হয়েছে। স্বর্ণ দিয়ে এ দুল বানাতে গেলে ১৫ থেকে ২০ হাজারেও পাওয়া যাবে না। এ দুল যেমন কম টাকায় পাওয়া যায়, তেমনি দেখতেও খুব সুন্দর। পরতেও খুব আরাম।
মার্কেট ঘুরে একটি থ্রি-পিস কিনেছি। সেটার সঙ্গে মিলিয়ে কানের দুল নিয়েছেন তিনি। এবার গলার হার কিনলাম। অল্প টাকাতেই ম্যাচিং জুয়েলারি কিনতে পারছেন বলে মন্তব্য করেন সানজিদা।
জেরীন সুলতানা, মুনমুন মালা, জাকিয়া নামে কয়েকজন তরুণী বাংলানিউজকে জানান, মডার্ন যুগে পোশাকের সঙ্গে ইমিটেশনের ম্যাচিং জুয়েলারি খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বেশিরভাগ মেয়েরাই এখন পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং করে জুয়েলারি কেনেন। এতে দেখতে অনেক সুন্দর দেখায়। এবারের ঈদে ইমিটেশন কালেকশনগুলো ব্যাপক মানানসই। প্রায় প্রতিটি অলঙ্কারই দেখতে ভীষণ সুন্দর। তাই বলে তো সবগুলো কেনা যায় না। পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং করে পছন্দের ইমিটেশন অলঙ্কার ক্রয় করেছেন যোগ করেন এসব তরুণীরা।
ইমিটেশন ব্যবসায়ী আব্দুল মোবিন জিন্নাহ, গফুর রহমান, জোবায়ের আলী বাংলানিউজকে জানান, হাত, কান, নাক, গলার সব গয়না এখন ইমিটেশনেরও হয়। নারীরা এ গয়না বেশ পছন্দ করেন। এখন মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা বেশিরভাগ তরুণীরা ম্যাচিং করে জুয়েলারি কিনছেন। বিশেষ করে কানের ও গলার জুয়েলারি বেশি বিক্রি হচ্ছে।
তারা জানান, কয়েকদিন ধরে ক্রেতাদের আনাগোনা বেড়েছে। আমাদের ধারণা চাঁদ রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় থাকবে। মার্কেটে ক্রেতাদের আনাগোনা যত বাড়বে আমাদের বিক্রিও ভালো হবে। ইমিটেশন জুয়েলারির চাহিদা সবসময় থাকে। তবে ঈদের সময় বিক্রি অনেক বেড়ে যায়। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এবারের ঈদ কেন্দ্রিক বিক্রি কম। তারপরও যা বিক্রি হচ্ছে তাতে আমরা খুশি।
ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, শেষ বেলায় এসে নানা ধরনের থ্রি-পিস ও শাড়ি কাপড়ের সঙ্গে ম্যাচিং করে তরুণীরা ইমিটেশন আইটেম কিনে থাকেন। তাই প্রত্যেক ঈদের শেষ সময়টাতে বিকিকিনি বেড়ে যায় ব্যবসায়ীদের। আর ঈদকে কেন্দ্র করে দোকানিদের নতুন নতুন কালেকশন তরুণীদের বেশ আকর্ষণ করে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২৪
কেইউএ/আরআইএস