ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বীর মুক্তিযোদ্ধার কুশপুতুল দাহ-ঝাড়ু মিছিল, মেয়রের বিচারের দাবি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
বীর মুক্তিযোদ্ধার কুশপুতুল দাহ-ঝাড়ু মিছিল,  মেয়রের বিচারের দাবি

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মো. মঞ্জুরুল আলমের কুশপুতুল দাহসহ ঝাড়ু মিছিল করার ঘটনায় প্রকাশ্যে অবমাননার অভিযোগে মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাটের বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।  

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে জেলা শহরের একটি রেস্তোরাঁয় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অবমাননা করায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুবিচার চাওয়া হয়।  

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মঞ্জুরুল আলমের ব্যবসায়িক অংশীদার সৈয়দ আহম্মদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজল ইসলাম, জাফর আহমেদ ভুঁইয়া ও মোকতার আহমেদ ভুঁইয়া।  

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল আলম অভিযোগ করেন, ২০২২ সালে রায়পুর থানা মসজিদ সংলগ্ন আমি ও আমার অংশীদার যৌথভাবে একটি ৯ তলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করি। শুরু থেকেই মেয়র রুবেল ভাট আমার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছেন। কিন্তু আমি চাঁদা দিতে বরাবরই অস্বীকার জানিয়ে আসছি। এরমধ্যেই পঞ্চমতলা সম্পন্ন হয়ে ষষ্ঠতলার কাজ চলমান রয়েছে।  

তিনি বলেন, গত ৪ মার্চ মেয়র রুবেল ভাটের লোকজন এসে আমাদের ভবনের সামনে সিঁড়ির রাউন্ড দেয়াল ভেঙে দেয়। কারণ জানতে চাইলে তারা ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। একইদিন ওমরাহ পালন করতে রায়পুর ছাড়ি আমি। এসময় আমার অংশীদার সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা সৈয়দ আহম্মদ অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপরও পরদিনের একটি মারামারির ঘটনা সাজিয়ে মেয়র তার কার্যালয়ের কার্যসহকারী মহিন উদ্দিন বিপুকে দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।  

মঞ্জুরুল আলম বলেন, চাঁদা দাবির ঘটনায় আমি মেয়র রুবেল ভাটসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রায়পুর আদালতে ২১ এপ্রিল মামলা দায়ের করি। এর জেরে আমার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) মানববন্ধন করা হয়েছে। বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে মেয়রের লোকজন আমার কুশপুতুল দাহ ও ঝাড়ু মিছিল করেছে। আমি এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার চাই। আমি প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।  

মঞ্জুরুল আলমের ব্যবসায়িক অংশীদার সৈয়দ আহম্মদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বর্তমান সরকারের অন্যতম স্লোগান। এরপরও মেয়র রুবেল ভাট একজন মুক্তিযোদ্ধার কুশপুতুল দাহ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করিয়েছেন। যারা দেশ স্বাধীন করেছে তাদের এমন অপমান কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।  

অভিযোগের বিষয়ে রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট বলেন, আমি ঢাকায় ছিলাম। আগে জানতাম না, পরে শুনেছি। আমি পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র, আমার পক্ষে লোকজন আসতেই পারে। কেউ যদি এসে মিছিল বা অন্য কিছু করে তাতো আমার বিষয় না। পক্ষে-বিপক্ষে লোকজন থাকবে এটাই স্বাভাবিক।  

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার বলেন, মেয়রের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তে আদালতের নির্দেশনা পেয়েছি। আগামী ৬ জুনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। এছাড়া পৌর কর্মচারী বিপুও একটি মামলা করেছেন মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল আলমের বিরুদ্ধে। দুটি মামলাই তদন্ত চলছে। মুক্তিযোদ্ধার কুশপুতুল দাহের ঘটনাটি জানা নেই।  

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান খান বলেন, মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে মিছিল হয়েছে শুনেছি। কুশপুতুল দাহ করার ঘটনাটি জানা নেই। কেউ আমাকে বলেনি। এমন ধরনের ঘটনা অবশ্যই ঘৃণিত কাজ। এ ঘটনায় তিনি মানহানি মামলা করতে পারেন। সেক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।