ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রাতিষ্ঠানিক কলকারখানায় শিশুশ্রম নেই: শ্রম প্রতিমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
প্রাতিষ্ঠানিক কলকারখানায় শিশুশ্রম নেই: শ্রম প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা: কিছু অনানুষ্ঠানিক খাতে শিশুশ্রম থাকলেও প্রাতিষ্ঠানিক কলকারখানায় কোনো শিশুশ্রম নেই বলে দাবি করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী।

মে দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য বলেন।

বিভিন্ন কলকারখানায় শিশুশ্রম নিয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক কলকারখানায় কোনো শিশুশ্রম নেই। তবে যেগুলো আছে সেগুলো অনানুষ্ঠানিক খাত। একটা বাসায় কাজের ছেলে কিংবা কাজের মেয়ে রাখা বা গ্যারেজে কোনো গরিব ঘরের সন্তানকে কাজ শেখানোর জন্য কাজে লাগানো হয়। এসব খাতে আমরা হস্তক্ষেপ করলেও বন্ধ করা সম্ভব হয় না।

এ সময় শ্রমসচিব মাহবুব হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কনভেনশন বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় থেকে শতভাগ চেষ্টা করা হবে। তবে ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নিরসন করা হবে। যদিও সেটা খুবই উচ্চাভিলাষী। মন্ত্রণালয় থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে দ্রুতই শিশুশ্রম নিরসন করা যায়। তৈরি পোশাক খাতসহ বিভিন্ন কলকারখানার মালিকরা আইএলওর কনভেনশন মেনে চলার অঙ্গীকার করেছেন।

শ্রমিকদের আট ঘণ্টা কর্মঘণ্টা নিয়ে এক প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তৈরি পোশাক খাত থেকে বেশির ভাগ বৈদেশিক মুদ্রা আসে। তারা যখন বিদেশি অর্ডার বাস্তবায়ন কিংবা রপ্তানি তাড়াতাড়ি করাতে শ্রমিকদের ওভারটাইম করান। এজন্য তাদের পাওনা দেওয়া হয়। শ্রমিকরা স্বতঃপ্রণোদিত হয় এই অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। এটা পারস্পরিক বিষয়, সমঝোতার ভিত্তিতে করা হয়। আবার অনানুষ্ঠানিক খাতে এগুলো হয়। যেমন দোকানে আট ঘণ্টার বেশি শ্রম দিতে হচ্ছে। এসব বিষয় নিরসনে আমরা কাজ করছি।

ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের বিষয়ে বিধান অনেক শিথিল করা হয়েছে। অনলাইন ও অফলাইনে ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধন আমরা দিচ্ছি। সেক্ষেত্রে তাদের বাধাগুলো শিথিল করে তারা যাতে সহজে ট্রেড ইউনিয়ন পেতে পারেন, আমরা সেই ব্যবস্থা করেছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রম আইনটি শ্রমিকবান্ধব করা হবে। এতে আইএলও কিছু সংযোজন করেছে। তাদের অনুরোধেই আইনটি পাস হওয়ার ক্ষেত্রে একটু বিলম্ব হচ্ছে। তবে আমাদের আগ্রহের কোনো কমতি নেই। আশা করছি, সংসদের আগামী অধিবেশনে অর্থাৎ বাজেট অধিবেশনেই এটি পাস হয়ে যাবে।

শ্রম আইন কতটুকু মানা হচ্ছে, প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত ঈদের আগে আমরা একটি সভা করেছিলাম। মালিক, শ্রমিক ও সরকার মিলে। সেখানে সমস্যা চিহ্নিত করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ বছরই প্রথম শ্রম খাতে ঈদের আগে বেতন-ভাতা দেওয়া হয়েছে। এর আগে সড়ক অবরোধ করা হতো, বিভিন্ন বিশৃঙ্খলা হতো। আগে শ্রমিক-মালিক বৈরী সম্পর্ক ছিল। এবার আমরা আলোচনা করে সেটা সমাধান করেছি। ছুটির আগে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেওয়া হয়েছে। সরকারের কাছে পাওনা প্রণোদনা মালিকপক্ষকে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে যথাযথ সময়ে শ্রমিকদের পাওনা দেওয়া হয়েছে। যে কারণে এবার আনন্দঘন পরিবেশে শ্রমিকরা ঈদ উদযাপন করেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইন না মানলে শ্রম আদালতে মামলা দায়ের করতে পারে। সেটা বাস্তবায়ন করতে আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে পরিদর্শকরা আছেন। তারা পরিদর্শন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কাজেই শ্রম আইন না মানলে লাইসেন্স বাতিলের ক্ষমতা আছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয় না, এমনটা বলা যাবে না। আমি আশ্বস্ত করতে চাই, গেল দুই মাসে আমার মন্ত্রণালয়কে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছভাবে এই পরিচালনা করা হয়েছে।

শ্রম আইন মানা হয় কিনা, এ বিষয়ে শ্রম সচিব বলেন, কলকারখানা পরিদর্শন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কাজ করছে। ১৩টি শ্রম আদালত আছে। শ্রমিকদের বকেয়া না দেওয়ায় একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকে হাজতে যেতে হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।