পাবনা: কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পাবনা জেলাতে প্রতি বছরই বিশাল বিশাল আকৃতির কোরবানির পশু নিয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়ে থাকে। এবারও জেলাতে যে কয়টি বিশাল আকৃতির পশুর নাম আলোচনায় রয়েছে তন্মধ্যে অন্যতম ‘পাঠান’ ও ‘কালাপাহাড়’।
দুটো ষাঁড়-ই পালন করা হয়েছে পাবনা সদরের জালালপুর গ্রামের রাজুর খামারে। পাকিস্তানি শাহীয়াল জাতের ২৫ মণ ওজনের ষাঁড় পাঠান। ইতোমধ্যে পাঠানকে ২৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন খামারি।
আর হলস্টিইন ফ্রিজিয়ান সংকর জাতের ২৮ মণ ওজনের ষাঁড়টির নাম রাখা হয়েছে ‘কালা পাহাড়’। এটি বিক্রি হয়েছে ১৪ লাখ টাকায়।
পুরান ঢাকার এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী বিশাল আকৃতির এই ষাঁড় দুটি মোট ৪০ লাখ টাকায় কিনেছেন। এ দুটি ছাড়াও রাজুর খামার থেকে আরও ৬টি গরু কিনেছেন তিনি কোরবানির জন্য।
সারা দেশের বিভিন্ন জেলার ক্রেতারা উদ্যোক্তা মো. রাজু আহম্মেদের ফেসবুক পেজ ও সরাসরি পশু দেখে পছন্দ করে কিনছেন ওই ব্যবসায়ী।
‘এম আর অ্যাগ্রো খামারের’ প্রতিষ্ঠাতা মো. রাজু আহম্মেদ জানান, এবারের কোরবানি ঈদের জন্য তার খামারে ৩২টি গরু প্রস্তুত করা হয়েছিল। অনলাইনে ইতোমধ্যে ৩০টি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। এবার তার খামার থেকে ৫ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ১০,১৫ ও ২০ লাখ টাকার ষাঁড়ও বিক্রি হয়েছে।
খামারের শ্রমিকরা জানান, সবচেয়ে বড় দুটি ষাঁড় কিনেছেন পুরান ঢাকার একজন ব্যবসায়ী। তিনিই একটি গরুটির নাম দিয়েছেন ‘পাঠান’। আমরা তার পর থেকে এই নামে তাকে ডেকে থাকি। রোজার ঈদের পরেই এই গরুটি বিক্রি হয়েছে। অনেক যত্ন করে গরুগুলিকে খাওয়াতে হয়। এখানে সব গরুই বড় আকারের। আমরা তিন চারজন মিলে তাদের প্রতিদিনের খাবার দিয়ে থাকি।
স্থানীয়রা বলেন, রাজুর খামারের বিশাল আকৃতির ষাঁড় দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ আসে। রাজুর মতো এলাকাতে যদি আরও কেউ খামার দেয় তা হলে কিছু লোকের কাজের ব্যবস্থা হতো। রাজু ভাই পড়াশোনার পাশাপাশি এই গরুর খামার করেছেন। বিভিন্ন স্থান থেকে রাজু ভাই গরু এনে লালনপালন করে বিক্রি করছেন।
খামারের মালিক উদ্যোক্তা মো. রাজু আহম্মেদ বলেন, ২০১৫ সালে বিএসসি শেষ করে বসে না থেকে এই গরু ব্যবসা শুরু করি। ৪টি গরু দিয়ে খামারের যাত্রা শুরু করে ভালো টাকা পেয়েছিলাম। পরের বছরই ২০টি গরু কিনে লালনপালন করে বেশ লাভবান হয়েছি। বিদেশ না গিয়ে দেশেই একটু কষ্ট করে খামার করে ভালো কিছু করার সম্ভব।
পাবনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গৌরাংগ কুমার তালুকদা বলেন, এবারের কোরবানির ঈদের পাবনা জেলাতে প্রায় সাড়ে ৬ লাখের বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে জেলার চাহিদা সাড়ে তিন লাখ পশু। বাকি তিন লাখের বেশি পশু সারা দেশে সরবরাহ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, জেলার দেশসেরা কোরবানির ষাঁড় রাজুর খামার থেকে বিক্রি হয়েছে। পাঠান নামে একটি ষাঁড় ২৬ লাখ টাকায়। এছাড়া চাটমোহর, ফরিদপুর ও পাবনা সদরের চর অঞ্চলে বেশ কিছু বড় গরু সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তাই যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করতে জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস কাজ করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৯ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২৪
এসএএইচ