ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছিলেন বাড়ি, হঠাৎ কাউন্টারে মায়ের মৃত্যু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩১ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৪
মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছিলেন বাড়ি, হঠাৎ কাউন্টারে মায়ের মৃত্যু

ঢাকা: রাজধানীর টেকনিক্যাল মোড়ে শাহজাদপুর পরিবহনের কাউন্টারে মায়ের মরদেহের পাশে কান্নারত পাঁচ বছরের ইশার ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ইশার সঙ্গে হৃদয়বিদারক এ ঘটনা ঘটে রোববার (১৬ জুন) রাত পৌনে ৮টার দিকে।

এ ঘটনার খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিহত নারীর নাম রুনা আক্তার। তার বাড়ি পাবনা ভাঙ্গুড়া থানা এলাকায়। রুনা আক্তার তার ছোট মেয়ে ইশাকে নিয়ে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার একটি বস্তিতে বসবাস করতেন।

নিহত রুনা আক্তারের স্বামী নেই। রোববার সন্ধ্যায় রুনা আক্তার রাজধানীর টেকনিক্যাল মোড়ে শাহজাদপুর পরিবহনের কাউন্টারের যান। ঈদ উপলক্ষে পাবনার ভাঙ্গুড়ায় মায়ের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশে মেয়ে ইশাকে নিয়ে বাস কাউন্টারে যান। রাত সাড়ে ৮টায় তাদের বাস পাবনার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া কথা ছিল।

আরও জানা যায়, রাত পৌনে আটার দিকে রুনার মেয়ে ইশাকে চেয়ারে বসিয়ে বাস কাউন্টারের বাথরুমে যান। বাথরুমে যাওয়ার দীর্ঘ সময় পার হওয়ার পরেও রুনা বের হয়নি। ইতোমধ্যে মা বের না হওয়া বাথরুমের দরজার সামনে ইশা কান্না করতে থাকেন। ইশার কান্না দেখে কাউন্টারের লোকজন বাথরুমের দরজার এসে ধাক্কা দিতে থাকে। এতেও রুনার সারা না পেয়ে কাউন্টারের লোকজন দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দেখেন রুনা মৃত অবস্থায় বাথরুমে পড়ে রয়েছে।

পরে কাউন্টারের লোকজন রুনার মরদেহ বাথরুম থেকে বের করে ডিএমপি দারুস সালাম থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবরে পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।

দারুস সালাম থানা পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে নারী পুলিশ সদস্যসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। এদিকে মায়ের মরদেহের পাশে বসে ইশার কান্না করার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

ভাইরাল এ ছবি দেখে রুমার বড় মেয়ে তিশা ও রুনার বড় বোন প্রথমে শাহজাদপুর কাউন্টারে আসে। পরে সেখানে থেকে দারুস সালাম থানায় যান।

রুনার বড় মেয়ে তিশা রাজধানীর মিরপুর ৬০ ফিট এলাকায় স্বামীকে নিয়ে থাকেন, আর রুনার বড় বোন রূপনগর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় থাকেন। ফেসবুকে ভাইরাল এ ছবি দেখে তারা সেখানে যান।

এ বিষয়ে দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সিদ্দিকুর রহমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রুনার মরদেহের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। প্রাথমিক ধারণা রুনা স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেছেন। ইশা এখন তার পরিবারের কাছে আছে।

তিনি বলেন,‌ রুনা হাজারীবাগ বস্তি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে রয়েছেন, তার স্বামী নেই। গত দীর্ঘ সময় ধরে রুনার যোগাযোগ ছিল না তার বোন এবং মায়ের সঙ্গে। কিন্তু গতকাল রুনা তার বোন এবং মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তাদের জানান ঈদ উপলক্ষে রুনা তার ছোট মেয়ে ইশাকে নিয়ে পাবনার বাড়িতে যাচ্ছেন।

এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান ওসি কাজী সিদ্দিকুর।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩১ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৪
পিএম/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।