ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ জুলাই ২০২৪, ২৪ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

‘আলী যাকের মুক্তিযুদ্ধের গ্রন্থপাঠ’র পুরস্কার পেলেন ৩০ শিক্ষার্থী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩২ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২৪
‘আলী যাকের মুক্তিযুদ্ধের গ্রন্থপাঠ’র পুরস্কার পেলেন ৩০ শিক্ষার্থী শনিবার রাজধানীর আগারগাঁও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয় | ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা, বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও নাট্যজন এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি প্রয়াত আলী যাকেরের স্মৃতি বহমান রাখতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ‘আলী যাকের মুক্তিযুদ্ধের গ্রন্থপাঠ’-এর উদ্যোগে সনদ ও পুরস্কার করা হয়েছে।

শনিবার (২৯ জুন) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে তিনটি বইপাঠ এবং প্রতিক্রিয়া লেখার ওপর ৩০ শিক্ষার্থীকে পুরস্কার ও সম্মাননা দেওয়া হয়।

দ্বিতীয় বারের মতো তিন মাসব্যাপী বইপাঠ কর্মসূচির সূচনা হয় গত নভেম্বরে। প্রতিটি গ্রন্থাগারে নির্বাচিত তিনটি বইয়ের পাঁচটি করে সেট দেওয়া হয়। স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আহসান হাবিব রচিত ‘৭১ এর রোজনামচা’, কলেজ পর্যায়ে শেখ তাসলিমা মুন রচিত ‘আমি একটি বাজপাখিকে হত্যা করতে চেয়েছিলাম’ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কথাসাহিত্যিক মাহমুদুল হক রচিত ‘জীবন আমার বোন’।

ঢাকা মহানগর ও সারা দেশ থেকে নির্বাচিত ৫০টি পাঠাগারকে বই দেওয়া হলেও ৪৬টি পাঠাগার থেকে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গ্রন্থপাঠ শেষে প্রতিক্রিয়া জমা দেয়। স্কুল পর্যায়ে ২২৬টি, কলেজ পর্যায়ে ১৬৩টি এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ১৫৯টি, মোট ৫৪৮টি পাঠ প্রতিক্রিয়া জমা পড়ে।  

প্রাপ্ত পাঠ প্রতিক্রিয়ার সংখ্যা অধিক হওয়ায় একটি প্রাথমিক নিবার্চক কমিটি গঠন করা হয়, এই কমিটির সদস্য ছিলেন সমকালের সাংবাদিক আবু সালেহ রনি, জনকণ্ঠের সাংবাদিক মোরসালিন মিজান, ভোরের কাগজের সাংবাদিক ঝর্ণা মনি। তারা যাচাই বাছাই করে স্কুল পর্যায়ে ৩৭টি, কলেজ পর্যায়ে ৩১টি এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ২৮টি পাঠ প্রতিক্রিয়া জুরি বোর্ডের চূড়ান্ত বিচার কাজের জন্য মনোনীত করেন।

জুরিদের দেওয়া নম্বরের ভিত্তিতে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রতি বিভাগে সেরা দশজন করে মোট ৩০ জনকে পাঁচ হাজার টাকার বই ও নগদ পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়। এ ছাড়াও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক পাঠককে সনদ দেওয়া হয়।

বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, ডা. সারওয়ার আলী, মফিদুল হক ও সারা যাকের, জুরি বোর্ডের সদস্য জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মিনার মনসুর ও পর্বতারোহী নিশাত মজুমদার, গ্রন্থপাঠ উদ্যোগ এর সমন্বয়ক মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ এবং আলী যাকের-পুত্র ইরেশ যাকের।

পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ট্রস্টি ডা. সারওয়ার আলী, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মিনার মনসুর, দনিয়া পাঠাগারের সভাপতি, আলী যাকের মুক্তিযুদ্ধের গ্রন্থপাঠ উদ্যোগের সমন্বয়কারী শাহনেওয়াজ, জুরিবোর্ড সদস্য পর্বতারোহী নিশাত মজুমদার। আলী যাকেরের পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন ইরেশ যাকের ও সারা যাকের।

সমাপনী বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি এবং সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর। তিনি বলেন, আমার পুরো জীবনের প্রায় তিন ভাগ আমি আলী যাকেরের সাথে কাটিয়েছি। তিনি সব সময় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কলম ধরেছেন। তিনি প্রচুর বই পড়তেন এবং লিখতেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার নিঃশর্ত আনুগত্য ছিল।

তিনি আরও বলেন, বই পড়া মানে মনের দরজা জানালাগুলো খুলে যাওয়া। যে জানালা দিয়ে সুর্যের আলো, বিশুদ্ধ বাতাস, ফুলের সুগন্ধ প্রবেশ করবে। বই পড়লে মানুষের মন আরও পরিশুদ্ধ হবে, যুক্তিবাদী মন গড়ে উঠবে, যার ফলে আমি কাউকে অন্ধভাবে অনুকরণ করব না।

বিভিন্ন গ্রন্থাগারের সদস্যদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৬ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২৪
আরকেআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।