ঢাকা, রবিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রাজধানীতে রথযাত্রায় মানুষের ঢল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৭ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২৪
রাজধানীতে রথযাত্রায় মানুষের ঢল ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: ভক্তের কল্যাণে জগদ্বীশ্বর শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেব এসেছেন ধরাধামে। সঙ্গে দাদা বলরাম বা বলভদ্র আর বোন সুভদ্রা।

বলা হয়, প্রতিবছর আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে দাদা ও বোনকে নিয়ে রথে চড়ে মাসির বাড়ি যান জগতের অধীশ্বর জগন্নাথ দেব। আর এ সময় পূজার্চনা, নানা উপাচার আর বর্ণিল আয়োজনে ভক্তরা মাতেন আনন্দে। নামেন রাজপথে। প্রভুর অনুগ্রহ ও জীবরূপ থেকে মুক্তিলাভের আশায় ভক্তরা টানেন রথের দড়ি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রথযাত্রার বর্ণনায় লিখেছেন, ‘রথ যাত্রা, লোকারণ্য মহা ধুমধাম/ভক্তরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম/পথভাবে, আমি দেব, রথভাবে আমি/মূর্তিভাবে, আমি দেব, হাসে অন্তর্যামী। ’ 

রোববার (৭ জুলাই) সম্প্রীতির মেলবন্ধনের বার্তা নিয়ে রথের চাকা গড়িয়েছে রাজপথে। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) মন্দির থেকে দুপুরে বের হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। সুবিশাল রথে ছিল জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি।

ভক্তরা সেই রথ টেনে নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন রাজপথ ঘুরে ইসকন মন্দির থেকে নিয়ে যান ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে। এ যাত্রাপথে ভক্তরা চলন্ত রথের দড়ি ছুঁয়েছেন। রথ থেকে ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয় প্রসাদ। এ সময় রথের সঙ্গে ভক্তরা ঢাক, ঢোল ও বাদ্যের তালে নেচে-গেয়ে করেছেন কীর্তন।  

এর আগে সকালে ইসকন মন্দিরে হরিনাম সংকীর্তন, পূজা ও যজ্ঞের মধ্য দিয়ে রথযাত্রার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় করা হয় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ। দুপুরে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এ সময় তিনি বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার- এ কথা বাস্তবায়িত হচ্ছে সব ধর্মীয় উৎসবেই। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

রথযাত্রার দিনটির মাহাত্ম্য তো আছেই এর সঙ্গে আরও একটি কারণে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে রথযাত্রা উৎসব প্রিয়। কারণ এদিনই দুর্গা মূর্তির কাঠামোতে মাটি দেওয়ার প্রথা বিশেষভাবে প্রচলিত রয়েছে। বিশেষ করে প্রাচীন পূজাগুলোর ক্ষেত্রে। জমিদার বাড়ির পূজা বা ঐতিহ্যবাহী বাড়ির পূজাগুলোতে এখনও এ নিয়ম চালু আছে। অনেকে এদিনটিকে বেছে নেন মণ্ডপের খুঁটিপূজার জন্য। এক কথায় এদিন থেকেই শুরু হয় দুর্গামূর্তি তৈরির কাজ। দুর্গাপূজার ক্ষণ গণনা। রথযাত্রা উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বসেছে মেলা। সেখানে দূরদূরান্ত থেকে আসবেন ভক্ত ও দর্শনার্থীরা। নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে ৯ দিনব্যাপী এ রথযাত্রা উৎসব আগামী ১৫ জুলাই উল্টো রথযাত্রার মধ্য দিয়ে শেষ হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২৪
টিএ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।