ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে চীন: সিপিপিসিসি চেয়ারম্যান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫২ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০২৪
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে চীন: সিপিপিসিসি চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সিপিপিসিসি চেয়ারম্যান ওয়াং হানিংয়ের বৈঠক

বেইজিং (চীন) থেকে: রোহিঙ্গা প্রত্যাবসন শুরু করতে চীন সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে বলে জানিয়েছেন চাইনিজ পিপলস পলিটিক্যাল কনসাল্টেটিভ কনফারেন্সের (সিপিপিসিসি) চেয়ারম্যান ওয়াং হানিং।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) স্থানীয় সময় বিকেলে বেইজিংয়ের গ্রেট হলে সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ কথা বলেন।

পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে সিপিপিসিসি চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি, ভাইস প্রেসিডেন্টসহ উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা বলেছেন, তারা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে এ (রোহিঙ্গা) সমস্যা সমাধান করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তা করবেন। তারা (চীন) বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে আলোচনার জন্য সহায়তা করবে।

হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে সাড়ে ৬ বছরের বেশি সময় ধরে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে এবং মিয়ানমার যে এখনো তাদের ফেরত নিয়ে যাচ্ছে না, বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হয়েছে। মিয়ানমার যাতে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে যায়, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, (রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে) সিপিপিসিসি চেয়ারম্যান বলেছেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যাতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হয়, সে বিষয়ে তারা যতটা সম্ভব সর্বোচ্চ সহায়তা করবেন।

বৈঠকে দুই দেশের বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ট্রেড গ্যাপ (বাণিজ্য ঘাটতি) যাতে কমানো যায়, প্রধানমন্ত্রী সে বিষয়ে গুরুত্বসহকারে আলোচনা করেছেন। এ প্রসঙ্গে সিপিপিসিসি চেয়ারম্যান বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে কোয়ালিটি পণ্য আমদানির জন্য তারা উদ্যোগ নেবেন।

বুধবার চীনের প্রেসিডেন্ট এবং চীনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামীকাল চীনের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে উন্নয়ন প্রাধান্য পাবে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়টি আলোচনা হবে, আমাদের ট্রেড গ্যাপ কমানোর বিষয়েও আলোচনা হবে।

চায়না কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল চীন সফর করবে। চায়না কমিটিউনিস্ট পার্টির নেতাদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী এবং বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে চীন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল, বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্র থেকে শুরু করে আমাদের অনেক আইকনিক স্থাপনা চীন নির্মাণ করেছে।

এর আগে, স্থানীয় সময় সকালে বেইজিংয়ের হোটেল সেন্ট রিটজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এশিয়ান অবকাঠামো ও বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন।

ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, এ সাক্ষাতে বাংলাদেশের অবকাঠামো তৈরি, নদীর ড্রেজিং এবং জলবায়ু খাতে বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ুর সহিষ্ণু ঘর নির্মাণের ক্ষেত্রে অর্থায়ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এশিয়ান অবকাঠামো ও বিনিয়োগ ব্যাংক বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ভবিষ্যতে আমাদের উন্নয়নের অভিযাত্রায় এবং বাংলাদেশকে ২০৪১ এর মধ্যে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশের রূপান্তরের ক্ষেত্রে এ ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জন্য ঋণের সুদের হার কমাতে এশিয়ান অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ জানান।

ব্রিফিংয়ে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০২৪
এমইউএম/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।