মাদারীপুর: সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে নারীসহ ৪ জনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার(১৬ জুলাই) বিকেলে সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের চাছার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, প্রায় ৬ মাস আগে সদর উপজেলার সরদারকান্দি গ্রামের সূর্য খাঁর ছেলে ইতালী প্রবাসী রোমান খাঁর সঙ্গে পাশের চাছার গ্রামের শহিদ মুন্সির মেয়ে সাবিনা আক্তারের বিয়ে হয়। অথচ বাল্যবিয়ে হচ্ছে এমন খবরে মঙ্গলবার বিকেলে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের ফিল্ড সুপারভাইজার লিখন হোসেন ও আয়েশা আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে সাবিনার নানাবাড়িতে হাজির হন ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান। পরে সত্যতা না পেলে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এ সময় সাবিনার নানা মুন্সি মকবুল হোসেন ও তার মামা মিজানুর রহমান মোল্লাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ইউপি চেয়ারম্যান। এর প্রতিবাদ করায় তাদের দুইজনকে মারধর করেন ইউপি চেয়ারম্যানে। বাঁধা দিতে এলে সাবিনার মা মাজেদা বেগম ও খালা আসমা আক্তারকেও পিটিয়ে আহত করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। পরে আহতদের উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় জেলা সদর হাসপাতালে। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
ধুরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার সঙ্গে ওই পরিবারের কোনো ঝামেলা হয়নি। বাল্যবিয়ের সত্যতা না পাওয়ায় আমরা সবাই চলে আসি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যে। মেয়ের ভুয়া জন্ম নিবন্ধন দিয়ে এই বিয়ে হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
মাদারীপুর জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাজমিন আফরোজ বলেন, চাছার গ্রামের বাল্য বিয়ের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে প্রমাণ না পাওয়ায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের লোকজনের চলে আসে। এ সময় মেয়েটির পরিবারের কারো সঙ্গে কোনো ধরনের উত্তেজনামূলক কর্মকাণ্ড ঘটেনি। তবে ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে ঘটনার ব্যাপারে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর অবগত নয়।
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তবে, মারামারি বা হামলার ঘটনা এখনও অভিযোগ আসেনি। কেউ অভিযোগ জানালে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. মশিউর রহমান বলেন, ধুরাইলে একটি বাড়িতে বাল্যবিয়ে হচ্ছে এমন খবরে ইউপি চেয়ারম্যান ও মহিলা অধিদপ্তরের লোকজন ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে সত্যতা না পাওয়া গেলে সবাই চলে আসে। পরে চেয়ারম্যানের সঙ্গে ওই পরিবারের মাঝে একটু ঝামেলা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২৪
এসএম